স্টাফ রিপোর্টার
যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষিসম্প্রসারণ প্রকল্পের ক্রয় প্রক্রিয়ায় গুরুতর ত্রুটির সত্যতা মিলেছে। ত্রুটিপূর্ণ একটি টেন্ডার আহ্বানের নোটিশে যেদিন প্রকল্প পরিচালক সাক্ষর করেছেন, সেদিনই তা ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। আরেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ছুটির দিনে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এসব অভিযোগ অনেকের দৃষ্টগোচর হওয়ায় তড়িঘরি করে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক। ত্রুটির কথা স্বীকারও করেছেন তিনি।
গত ফেব্রুয়ারিতে যোগদানের পর এ পর্যন্ত চারটি দরপত্র আহ্বান আহ্বান করেছেন যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষিসম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রবিউল ইসলাম। এরমধ্যে মার্চের ১৯ তারিখ একটি বিজ্ঞাপন দৈনিক দেশের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।বিজ্ঞাপনে ওই তারিখেই স্বাক্ষর করেছেন প্রকল্প পরিচালক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে প্রতিয়মান প্রকল্প পরিচালক আগেই এডভান্স ডেটে স্বাক্ষর করে রাখেন, যা সরকারি আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
এরপর আরেকটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায়,ওই দরপত্র বিক্রয়ের শেষ তারিখ ছিল ০২-০৪-২০২৫ (ঈদের ৩য় দিন) এবং জমাদানের শেষ তারিখ ও দরপত্র উন্মুক্তের তারিখ ছিল ০৩-০৪-২০২৫ খিঃ (সাধারণ ছুটির ঘোষণা)। দুটিই সরকারি ছুটির দিন যা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট এ্যক্ট-২০০৮ (পিপিআর-২০০৮) অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ।
আবার যেকোনো দরপত্র আহবানের নোটিশ জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গানোর আইন থাকলেও সরেজমিনে দরপত্র নোটিশে উল্লেখিত দপ্তরে কোনো নোটিশ বোর্ড পাওয়া যায়নি, এটিও সরকারি আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এমন উদ্ভট বিজ্ঞাপনের ফলাফলও হয়েছে তেমনিই। উন্মুক্ত দরপদ্ধতিতে ক্রয় কার্য সম্পন্ন করা হলেও মেসার্স প্রত্যাশা এন্টারপ্রাইজ, ৫২৯, নয়াটোলা, মগবাজার, ঢাকা নামে মাত্র একজন দরদাতা দরপত্র জমা দেন এবং তিনিই রেস্পন্সিভ দরদাতা হিসেবে গাড়ি সরবরাহের দ্বায়িত্ব পান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সংশ্লিরা জানান, প্রকল্প পরিচালক রবিউল ইসলামের বাড়ি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ)জাকির হোসেনের গ্রামের বাড়ি মাগুরা সদরের একই গ্রামে পাশপাশি হওয়ার সুবাদে তিনি প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। রবিউল ইসলাম নিজেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ)জাকির হোসেনের কাছের লোক বলে বিভিন্ন স্থানে প্রচার করেন এবং তারই ক্ষমতাই তিনি বিভিন্ন সেফ সাইটে আছেন বলে দাবি করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, দরপত্র আহ্বানে আমাদের ত্রুটি হওয়ায় দ্রুতই পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ বিষয়ে এখনো কোনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি, কোনো অর্থও ছাড় করা হয়নি। আমরা একদম নতুন করে টেন্ডার করব।
একজন তো কাজ পেয়েছেন, সেক্ষেত্রে নতুন করে টেন্ডার কেন? এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, একজন হলে অনেক ধরনের কথা ওঠে। অন্তত ৩-৪টি টেন্ডার ড্রপ হলে ভালো হয়। আমরা এখন ত্রুটিমুক্ত দরপত্রের দিকে এগোচ্ছি।
Leave a Reply