1. mmisuk010@gmail.com : Misuk joy : Misuk joy
  2. rijukushtia@gmail.com : riju :
শিরোনামঃ
হাটশ হরিপুরে ভোরের পাখি আয়োজিত চায়নাবার ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে ইবি শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার কুষ্টিয়া পৌরসভায় বেতন ও বোনাস বৃদ্ধির দাবিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিক্ষোভ গড়াই নদ খননে ড্রেজারের কোটি টাকার তেল আত্মসাতের অভিযোগ কুষ্টিয়ায় মাদকাসক্ত প্রধান শিক্ষক রাসেলের বিরুদ্ধে চলছে বিভাগীয় তদন্ত কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্বামীর অনুপস্থিতিতে ভাবিকে ধর্ষণ, দেবর নাইম কারাগারে ঝিনাইদহের আলোচিত তিন খুনের মামলায় শীর্ষ চরমপন্থী লিপটন রিমান্ডে শৈলকুপায় চাঞ্চল্যকর তিন হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার সাংবাদিক হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবিতে মানবাধিকার সমিতির মানববন্ধন মিরপুরে গৃহবধু সুমাইয়াকে হত্যা করে  আত্মহত্যার নাটক সাজানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 
repliquemontre.co
www.igetaustralianvapor.com
www.topwatchesol.com

fake rolex

relojes replica

shi sha magic
franck muller replica

র‌্যাবের আয়নাঘর, গুম-খুন স্বীকার করলেন মহাপরিচালক, চাইলেন ক্ষমা

  • আপডেট টাইমঃ শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৬১ মোট ভিউ
র‌্যাবের আয়নাঘর, গুম-খুন স্বীকার করলেন মহাপরিচালক, চাইলেন ক্ষমা
র‌্যাবের আয়নাঘর, গুম-খুন স্বীকার করলেন মহাপরিচালক, চাইলেন ক্ষমা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দপ্তরে গোপন নির্যাতন কেন্দ্র থাকার কথা এবং গুম-খুনের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন বাহিনীর মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান।
‘গুম তদন্ত কমিশনের’ নির্দেশে ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সেসব গোপন নির্যাতন কেন্দ্র ‘অপরিবর্তিত অবস্থায়’ রাখার কথা বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার কারওয়ানবাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে থাকা বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন র‌্যাব প্রধান।
বিভিন্ন সময়ে র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুম খুনের যেসব অভিযোগ উঠেছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচারের প্রত্যাশা জানিয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
শহিদুর রহমান বলেন, “যত ধরনের অভিযোগ আছে, গুমের বিষয়ে, খুনের বিষয়ে, আয়নাঘরের বিষয়ে, এটা গুম-খুন কমিশন তদন্ত করছে। আমরা তাদের সার্বিকভাবে এ তদন্তে সহায়তা করছি। আমরা আশা করব, এ তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে একটা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
র‌্যাবে ‘আয়নাঘর’ ছিল কি-না জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, “র‌্যাবে যে আয়নাঘরের বিষয়টা এসেছে, এটাতো ছিল, আছে। কমিশন আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছে যে, সেটা যে অবস্থায় আছে ওই অবস্থায় রাখার জন্য। কোথাও এখন কোনরকম যেন পরিবর্তন, পরিবর্ধন না করা হয়। সে অনুযায়ী আমরা ঠিক ওইভাবেই রেখেছি, যা যেভাবে ছিল।”
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী মতের বহু মানুষকে তুলে নিয়ে বিচার বহির্ভূতভাবে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার অভিযোগ ওঠে, সেইসব বন্দিশালাকে প্রতীকী হিসেবে ‘আয়নাঘর’ নাম দেওয়া হয়েছে।
তুলে নেওয়া সেই সব মানুষদের কেউ কেউ বহু দিন পর পরিবারের কাছে ফিরে বীভৎস নির্যাতনের বিবরণ দিলেও অনেকেরই এখনও খোঁজ মেলেনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ‘গুমের’ ঘটনা তদন্তে গত ২৭ অগাস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ‘গুম তদন্ত কমিশন’ গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কমিশনে যত অভিযোগ পড়েছে, তার বেশিরভাগই পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র‌্যাবের বিরুদ্ধে।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যে র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে বিএনপি, যদিও ২০০৪ সালে তাদের সরকারের সময়ই এ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
পুলিশ সংস্কার কমিটির কাছে জমা দেওয়া সুপারিশমালা তুলে ধরতে গিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ১০ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “র‌্যাব বাহিনী আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছে। আর দেশের মধ্যে তো র‌্যাব মানেই একটা দানব সৃষ্টি করেছে। তারা যত ধরনের খুন-গুম, যত এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং অধিকাংশই এই র‌্যাব বাহিনীর মাধ্যমে হয়েছে। সেজন্য আমরা এটিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছি।”
এরপর বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক ভবিষ্যতে ‘আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে’ তার বাহিনীর দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “র‌্যাবের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ আছে। গুম-খুন, অপহরণ, এ ধরনের বেশকিছু অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে আছে।
“আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই, আজ পর্যন্ত যে সমস্ত জনগণের যারা র‌্যাব দ্বারা, নির্যাতিত বা অত্যাচারিত হয়েছে, তাদের কাছে এবং যারা হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে, যেমন নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ যারা র‌্যাব কর্তৃক হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করি।”
পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ সমস্ত ঘটনার বিচারের প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, “অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গুম-খুন কমিশন করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ ধরনের অপরাধ আমলে নিয়ে বিচারকাজ পরিচালনা করছেন। আমরা আশা করব, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং এর বিচার হবে। এভাবেই দায়মুক্তি সম্ভব, অন্য কোনোভাবেভাবেই আমরা এ দায় থেকে মুক্ত হতে পারব না।
কেবলমাত্র সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারের মাধ্যমেই আমরা দায়মুক্ত হতে চাই। আমি আপনাদের মাধ্যমে আবারও যারা র‌্যাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। তাদের পরিবারের, তাদের কাছে আবারও দুঃখপ্রকাশ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলে আসছে, নিষেধাজ্ঞা উঠানোর প্রক্রিয়া বেশ ‘জটিল’।
র‌্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাহিনীর প্রধান বলেন, “আমি র‌্যাবে কর্মরত আছি। আমরা যতদিন র‌্যাবে দায়িত্ব পালন করব, আমাদের দায়িত্ব আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করব। এ ব্যাপারে সরকার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, সেটাই শিরোধার্য। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকব।”
র‌্যাবের পোশাক পরিবর্তন চান কি-নাÑ এ প্রশ্নে একেএম শহিদুর রহমান বলেন, “পুলিশের ক্ষেত্রে দাবি উঠেছে, র‌্যাবের ক্ষেত্রেও দাবি উঠেছে। আমরা পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি। আমি মনে করি পোশাকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে মানুষটাকে পোশাক পরানো হয় তারা। ভালো ব্যক্তি যে পোশাকই পরুক না কেন তার কাছ থেকে আমরা ভালো কিছু পাব, খারাপ ব্যক্তিকে যত ভালো পোশাকই পরাই, আমরা ভালো কিছু পাব না।”
র‌্যাবের নিজস্ব আইন প্রণয়নের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “র‌্যাবের নির্দিষ্ট কোনো আইন নাই। পুলিশ ব্যাটালিয়ন আইন সংশোধন করে র‌্যাব বাহিনী গঠন করা হয়েছে। আমরা র‌্যাবের জন্য একটা আইন প্রণয়নের চিন্তা করছি। এছাড়া, কীভাবে সংস্কার আনা যায় জনসাধারণের মতামত সাপেক্ষে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
আন্দোলনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হেলিকপ্টারের বিষয়ে মহামান্য হাই কোর্টের যে রিট আছে, এ সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলাও রুজু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটার অনুসন্ধান করছে। আমরা আশা করব এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসবে। এবং এর প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করা হবে।”
আন্দোলনে অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত ভিডিও দেখে দুই হাতে দুইটা পিস্তল নিয়ে গুলি করছিল পাবনায়, তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। যাত্রাবাড়ী এলাকায় লিটন নামে একজন ছিলেন, তাকেও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এ পর্যন্ত মোট ৩০ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আরও যারা আছে, গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।”
র‌্যাব সদস্যদের ছিনতাই-ডাকাতির মত বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মহাপরিচালক বলেন, “এ পর্যন্ত ছিনতাই-ডাকাতি-চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত জড়িত ১৬ জন র‌্যাব সদস্যকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি চার্জ দায়ের করেছি। ভবিষ্যতেও কোনো সদস্য এ ধরনের অপরাধ করলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা এবং বিভাগীয় মামলা দুটোই অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
নারায়ণঞ্জে ত্বকী হত্যাকা-ের তদন্তে ‘যথেষ্ট অগ্রগতি’ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “৫ অগাস্টের আগ পর্যন্ত ৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছিল, তাদের দুইজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিল। ৫ অগাস্টের পরে আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন জবানবন্দি দিয়েছে। আশা করছি মামলার তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হব।”
বগুড়ায় মাকে হত্যার দায়ে সন্তানকে অভিযুক্ত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শহিদুর রহমান বলেন, “কাজ করতে গেলে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়, কাজ না করলে ভুল হয় না। এক্ষেত্রে যাতে ভুলভ্রান্তি না হয়, ভবিষ্যতে সতর্ক থাকব। বগুড়ার ওই ঘটনায় পেশাদারত্বের পরিচয় না দেওয়ার কারণে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত ১০ নভেম্বর বগুড়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) লাশ বাড়িতে থাকা ডিপফ্রিজের ভিতরে পাওয়ার ঘটনায় পরদিন তার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।
১২ নভেম্বর সকালে র‌্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হাত খরচের টাকা এবং প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরেই’ মাকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখেন সাদ।
পরে পুলিশি তদন্তে সাদ বিন আজিজুরের সম্পৃক্ততা না থাকার কথা উঠে এলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় পড়ে র‌্যাব।
মহাপরিচালক জানান, গণ অভ্যুত্থানের সময় র‌্যাবের ১৬৮টি অস্ত্র খোয়া গিয়েছিল, যার মধ্যে ৯০টি উদ্ধার হয়েছে। আর লুট হওয়া ১২ হাজার গুলির মধ্যে ৭ হাজার উদ্ধার সম্ভব হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জড়িতদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে র‌্যাব প্রধান বলেন, এখন পর্যন্ত ৪ জন সাবেক মন্ত্রী, ১৭ জন সাবেক এমপি, সাবেক মেয়র/উপজেলা/ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ৪০ জন, কাউন্সিলর/মেম্বার ১৬ জন, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৮৩ জন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে চিহ্নিত করে ৩০ জন সরাসরি গুলিবর্ষণকারীসহ সর্বমোট ৩৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সূত্র : এনএনবি

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও পড়ুনঃ

জড়িত সাবেক অধ্যক্ষ ও সভাপতি কুষ্টিয়া সিটি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির হরিলুট ! স্যত খবর ডেস্ক : ১৮ জুন ২০২৫।। কুষ্টিয়া শহরের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ কুষ্টিয়া সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে কলেজ ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে কুষ্টিয়া সিটি কলেজের উত্তরা ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিন, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান মজনুসহ কলেজের কয়েকজন শিক্ষক এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে অনুসন্ধানে তথ্য মিলেছে। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর ১৯শে আগস্ট তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এর মেয়াদ শেষ হয়। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মজনু। ২০ আগস্ট থেকে কলেজটির এ্যাডহোক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক । সভাপতি হিসেবে মতিউর রহমান মজনুর মেয়াদকাল শেষ হলেও কুষ্টিয়া সিটি কলেজের নামে চালু থাকা উত্তরা ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার চলতি হিসাব থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। কলেজটির চলতি হিসাব টিকে টাকা উত্তোলনে সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান মজনুর স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে যার সত্যতা মিলেছে। ওই সময়কালে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আন্তাজ উদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিনের পূর্ণ সহযোগিতা নিয়ে সাবেক সভাপতি সহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও সিটি কলেজের সম্মুখে কুষ্টিয়া রাজবাড়ী মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা মার্কেট নির্মাণ ও দোকান বরাদ্দ নিয়েও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ উঠেছে। কলেজটির সম্মুখে গড়ে ওঠা এই মার্কেটের দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রেও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত দক্ষসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিজেদের নামে বরাদ্দ নেওয়ার পাশাপাশি, পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়দের নাম পরিচয় ব্যবহার করেছেন। কলেজের কাছে থাকা দোকান বরাদ্দের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায় সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মঞ্জু, তার স্ত্রী, কন্যা সহ পরিবারের সদস্যদের নামে বেশ কয়েকটি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিনও সুযোগের সৎ ব্যবহার করতে ছাড়েননি। আন্তাজ উদ্দিন তার নিজের নামে দোকান বরাদ্দ নেওয়ার পাশাপাশি, তার স্ত্রী ছেলে ও পুত্রবধূর নামে বেশ কয়েকটা দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। বরাদ্দ নেওয়া একটি দোকান শেখ আমানত আলী নামে এক ব্যক্তির কাছে ১৪ লক্ষ বিক্রি করেন। অথচ এই দোকান ক্রয় করতে কলেজ ফান্ডে তিনি মাত্র চার লক্ষ টাকা জমা দেন। আওয়ামী লীগের দোষর সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিন দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন খাত তৈরি করে কলেজের অর্থ লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অন্যান্য শিক্ষকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষক এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন, আন্তাসউদ্দিন মূলত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের কুষ্টিয়া ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ ও তার ভাই আতাউর রহমান আতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধরাকে সরা জ্ঞান করেন নি। ওই সময় প্রতিবাদ করারও সুযোগ ছিল না বলে শিক্ষকদের দাবি। এই প্রতিবেদকের হাতে আসা নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিগত সরকারের শাসনামলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে আওয়ামী লীগের এই দোসররা লক্ষ লক্ষ টাকা ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন। একটি নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কলেজের সম্মুখে যে মার্কেটটি নির্মাণ করা হয়েছে তার নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে আনুমানিক ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার মত। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, বরাদ্দকৃত দোকান থেকে উপার্জিত হয়েছে সমপরিমাণ অর্থ। অর্থাৎ দোকান বরাদ্দ থেকে আয় এবং ব্যয় কৌশলে একই দেখানো হয়েছে। মাঝখানে একাধিক দোকান বরাদ্দ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছেন তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। কলেজের শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদক কে জানান, আমরা যাদেরকে বাবা মায়ের পরেই সম্মানের জায়গায় রেখেছি সেই শিক্ষকরা কিভাবে এই ধরনের দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছে ভাবতেই অবাক লাগছে। এই শিক্ষার্থী দাবি করেন, একজন দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক কখনো তার শিক্ষার্থীদের ভালো শিক্ষা দিতে পারেনা। বিষয়গুলো নিয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা খুব বিরাজ করছে। যা যেকোনো সময় গণবিস্ফোরণ আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। অভিযোগের বিষয়ে কুষ্টিয়া সিটি কলেজের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মজনুর যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নাম্বারটি বন্ধ হওয়া যায়। কলেজটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিন এই প্রতিবেদন এর কাছে দাবি করেছেন, তিনি যা করেছেন নিয়ম মেনেই করেছেন। কলেজ ফান্ডের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনে সাবেক সভাপতি স্বাক্ষর কেন ব্যবহার করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার কোন সদ্য দিতে পারেননি। সদত্তর মিলেনি তার এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে বরাদ্দ হওয়া দোকানের বিষয়েও। কুষ্টিয়া সিটি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান এই প্রতিবেদককে জানান, অভিযোগের বিষয়গুলো নিয়ে ইতিমধ্যে তারা কাজ শুরু করেছেন। প্রত্যেকটি অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তপূর্বক অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। কুষ্টিয়া সিটি কলেজের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম সাজ্জাদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই অনিয়ম তছরুপ ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়গুলো অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে প্রত্যেকটি অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ দালিলিক প্রমাণাদি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি স্বীকার করেন, কুষ্টিয়া সিটি কলেজের অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জড়িত। ‌ অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিরাও যতই শক্তিশালী হোক না কেন প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এই প্রতিবেদকের কাছে আসা কুষ্টিয়া সিটি কলেজে সংগঠিত অর্ধশতাধিক অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তথ্য যাচাই-বাছাই সহ পর্যালোচনা করে প্রত্যেকটি ঘটনা প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা সহ স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ।

© All rights reserved © 2021 | Powered By Sattokhobor Media Ltd
Site Customized By NewsTech.Com