কোথাও রাস্তার পাশে পরিমিত জায়গা নেই আবার কোথাও হাত দিয়ে টান দিলে উঠে আসছে বিটুমিন আর পাথর। আবার কোথাও পাওয়া গেছে নিম্নমানের ইট। সোমবার (১২ মে) কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের চলমান কাজে দুদকের অভিযানে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষের দিকে এসে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ কাজ বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগ করে। ছয়টি প্যাকেজে ৬ জন ঠিকাদার কুষ্টিয়া থেকে মেহেরপুর পর্যন্ত প্রায়ই ৬০ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করে প্রায় ৩ বছর আগে। শুরুর পর থেকেই এ কাজে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কেন্দ্রীয় অফিসেও এ ধরনের অভিযোগ জমা পড়ে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে দুদক সমন্বিত কার্যালয় কুষ্টিয়ার কর্মকর্তারা গতকাল সরেজমিন এসব অভিযোগ তদন্তে যান।
দুদকের টিম চলমান প্রকল্পে নানা অনিয়ম দেখতে পেয়েছে। এ সময় কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান শেষে দুদক সমন্বিত কার্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল বলেন, ‘তাদের কাছে অভিযোগ ছিল কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক পুনর্নির্মাণকাজে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হয়েছে। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। অভিযানে এসে তার প্রমাণও মিলেছে।’ তিনি বলেন, কাজের শিডিউল অনুযায়ী রাস্তার দুপাশে যে দৈর্ঘের শোল্ডার (জায়গা) থাকার কথা, অধিকাংশ স্থানে সেটি নেই। ফলে বর্ষা মৌসুমে দুপাশ থেকে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া অনেক জায়গায় নিম্নমানের উপকরণ খুঁজে পেয়েছেন তারা। আবার কোথাও কোথাও বিটুমিন ও পাথরের মাত্রা ঠিক না হওয়াই হাত দিয়ে টান দিলে পিচ ও খোয়া উঠে আসছে। তিনি বলেন, ‘তারা কিছু উপকরণ সংগ্রহ করেছেন। এগুলো পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।’ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন চেয়ে দুদক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলেও জানান নীলকমল পাল।
তবে অভিযানের সময় উপস্থিত কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী লিটন আহমেদ খান দুদক টিমের বক্তব্যের ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘সমস্ত নিয়মকানুন মেনে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।’
Leave a Reply