কুষ্টিয়া,বুধবার ১৩ নভেম্বর : ১৩ নভেম্বর অমর কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়ায় কবির বাস্তুভিটায় দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।
আজ বুধবার বিকেলে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান।এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন আজ বিকেলে লাঠিখেলা ও আলোচনা শেষে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাট্যানুষ্ঠান। এদিন মঞ্চায়িত হবে কবির লেখা গাজী মিয়ার বস্তানী ও উদাসীন পথিকের মনের কথা অবলম্বনে নাটক ‘কারো কিছু বলার নেই’। পরিবেশনা করবেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি ও বিজয় নাট্যগোষ্ঠির শিল্পীবৃন্দ।
১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কবির কালজয়ী উপন্যাস বিষাদ-সিন্ধু অবলম্বনে নাটক ‘ফুরাত নদীর তীরে’ মঞ্চায়িত হবে। এর মধ্যদিয়ে শেষ হবে জন্মোৎসব। এছাড়াও জন্মোৎসব উপলক্ষে কবির বাস্তুভিটায় বসবে গ্রামীণ মেলা।
মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্যকর্ম রচনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। ভারতী, সংবাদ প্রভাকর, মিহির, হাফেজ, আহমদী, নবরত্ন প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা ও ফারসি ভাষা রপ্ত করেন তিনি। ধর্ম, আইন, প্রবন্ধ, ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা, নাটক, গান ও উপন্যাস রচনা করেছেন তিনি। এরমধ্যে কোরআন, শাহনামা, গুলিস্তা, কাসাসুল আম্বিয়া, রামায়ন-মহাভারত, বিদ্যাসুন্দর দাশরথী রায়ের পাঁচালী, বানভট্টের কাদম্বরী উল্লেখযোগ্য।
১৮৬৯ সালে লেখা মীর মশাররফ হোসেনের ‘রত্নবতী’ উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর তিনি লিখেন তাঁর অমর সৃষ্টি ১৮৮৫ সালে লেখা ‘বিষাদ সিন্ধু’। এ ছাড়া উদাসীন পথিকের মনের কথা, রাজিয়া খাতুন, তাহমিনা, বাঁধাখাতা, বধূমাতাও উল্লেখ্য। তার রচিত নাটক বসন্ত কুমারী ও জমিদার দর্পণ বাংলাসাহিত্যে এক বিশেষ জায়গা করে আছে।
১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ তিনি করেন। তার পিতার নাম ছিল মীর মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতার নাম ছিল দৌলতন নেসা। তিনি ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কবির ১৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী গ্রামীণ লাঠিখেলা, গ্রামীণ মেলা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মঞ্চ নাটকের আয়োজন করা হয়েছে।’
Leave a Reply