এসব ঘটনা ঘটে গাজীপুর, শেরপুর, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায়। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গাজীপুরে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ হারালেন শিক্ষার্থী
গাজীপুরের টঙ্গীতে বজ্রপাতে রাকিবুল হাসান খান রাফি (২৩) নামে এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের তুরাগ নদের তীরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাফি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার বয়রা নিয়ামতপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে। তিনি উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন এবং কামারপাড়া অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইসকান্দার হাবিবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে রাফি ও তার বন্ধুরা মিলে ক্রিকেট খেলতে যান ইজতেমা মাঠে। খেলা শেষে ফেরার পথে বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। বন্ধুরা দ্রুত তাকে কামারপাড়া আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
শেরপুরে ধান কাটতে গিয়ে কৃষকের মৃত্যু
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও উত্তরপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে গোলাম মোস্তফা (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আফিজুল হক নামের আরেক কৃষক।
নিহত গোলাম মোস্তফা ওই গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মাঠে ধান কাটার সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে দুইজনই অচেতন হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গোলাম মোস্তফাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত আফিজুল হক নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সুনামগঞ্জে হাওরে বজ্রপাতে শ্রমিক নিহত
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পাগনার হাওরে বজ্রপাতে মানিক মিয়া (৩৫) নামে এক কৃষি শ্রমিক মারা গেছেন। তিনি স্থানীয় লক্ষ্মীপুর নতুনপাড়ার মৃত হুসেন আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, মানিক মিয়া তার ছেলেকে নিয়ে হাওরে বোরো ধান কাটতে যান। ঝড় ও বৃষ্টির সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তবে তার সঙ্গে থাকা ছেলেটি অক্ষত রয়েছে।
জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, লাশ হাওর থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নেত্রকোনায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল আরও একজনের
বৃহস্পতিবার নেত্রকোনায়ও বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটি তদন্ত করছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এপ্রিল থেকে মে মাসে বজ্রপাতের হার বেশি থাকে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চল, উন্মুক্ত মাঠ ও জলাশয়ের পাশে অবস্থান করা ব্যক্তিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। কৃষিকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য বজ্রপাতের সময় মাঠে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply