মোঃ ইয়ামিন হাসান শুভ, স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কাইটাপাড়া কৃষ্ণ গোবিন্দপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে এক ভয়ঙ্কর মাদকচক্র—যার নেতৃত্বে রয়েছে একই পরিবারের তিন সদস্য: মোঃ বাবলু, তার স্ত্রী শাবানা বেগম ও ছেলে বিশাল। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এরা তিনজনেই ভিন্ন ভিন্ন মাদক ব্যবসার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত, এবং এলাকায় এক প্রভাবশালী মাদক সিন্ডিকেট চালাচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, মোঃ বাবলু দীর্ঘদিন ধরে হিরোইনের মূল সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করছেন। সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গোপনে হিরোইন এনে শহরের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করাই তার প্রধান কাজ। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তিনি একটি সুসংগঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই চক্র চালিয়ে আসছেন এবং বহু তরুণকে এতে যুক্ত করেছেন।
তার স্ত্রী শাবানা বেগম নিজেই একটি ফেনসিডিল ও হিরোইন সরবরাহকারী চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নারীদের ব্যবহার করে তিনি এই ব্যবসা চালাচ্ছেন এবং স্থানীয় কিছু মাদকের মামলায় অভিযুক্ত নারীদের সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ আছে বলে জানান এলাকাবাসী। তবে প্রশাসনের কাছে এখনো পর্যন্ত তার নামে কোনো দৃশ্যমান আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য বিশাল কিশোরদের একটি গ্যাং গঠন করে ইয়াবা কারবারে নেমেছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে সে ইয়াবার চালান বহন, বিতরণ ও সংগ্রহের কাজ করাচ্ছে। এই কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা এখন কোমলমতি তরুণদের জীবনেও বিষ ঢালছে। “ভয় আর নীরবতা”—এই চক্রের প্রধান অস্ত্র
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবাদকারীদের নানা রকম হয়রানি ও হুমকির মুখে পড়তে হয়। ফলে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সমাজে মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে, কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং পুরো এলাকা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। এই পরিবার এখন কাইটাপাড়ার মানুষের কাছে “মাদক-ত্রয়ী” নামে কুখ্যাত। প্রশাসন কেন নীরব? এই ভয়ঙ্কর বাস্তবতার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে উঠছে এক জ্বলন্ত প্রশ্ন—কেন এই নীরবতা? কারা এদের ছায়া দিচ্ছে?
এলাকাবাসীর ভাষায়, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় এরা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বহাল তবিয়তে তাদের চক্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই চক্রকে ভেঙে না দিলে রানিহাটি কাইটাপাড়া এবং আশপাশের অঞ্চলগুলোয় মাদকের ছোবল আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাই আমরা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি— অবিলম্বে তিন সদস্যের এই পরিবারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তদন্ত শুরু করা হোক, মাদকের উৎস এবং সরবরাহ চেইনের তথ্য অনুসন্ধান করে তা ভেঙে দেওয়া হোক, কিশোরদের মাদক থেকে ফিরিয়ে আনতে সচেতনতামূলক অভিযান শুরু করা হোক, এলাকায় পুলিশি টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হোক, ভুক্তভোগী বা প্রতিবাদকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
মাদক শুধু একজনের নয়, পুরো সমাজের শত্রু। রানিহাটি কাইটাপাড়ার মাটি যেন মাদকের বিষে আর না ভরে—এটাই এখন স্থানীয়দের প্রধান আকুতি। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থানীয়রা জানান এখনই পদক্ষেপ নিন, নাহলে কাল হতে পারে অনেক দেরি।
Leave a Reply