কুয়েতের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহমাদি গভর্নরেটের মানগাফ এলাকায় শ্রমিকদের বসবাসের জন্য বরাদ্দ করা একটি ভবনে আগুন লেগে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী শেখ ফাহাদ ইউসুফ সউদ আল-সাবা জানিয়েছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় ভোররাতে ভবনটিতে আগুন লাগে। ওই সময় ভবনটি থাকা অধিকাংশ শ্রমিকই ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমের মধ্যেই অনেক আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।
উপপ্রধানমন্ত্রী শেখ ফাহাদ বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ ঘটনার জন্য আবাসনের মালিকদের দায়ী করে বলেছেন, তাদের লোভ ও নিয়মনীতি লঙ্ঘনের কারণেই ঘটনাটি ঘটেছে।
“দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভবনের মালিকদের লোভের কারণেই এমন একটি ঘটনা ঘটেছে,” বলেছেন কুয়েতের এই উপপ্রধানমন্ত্রী, যিনি একই সঙ্গে দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে আছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টায় কর্তৃপক্ষ আগুন লাগার খবর পায় বলে জানিয়েছেন কুয়েত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইদ রাশিদ হামাদ।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে জেনারেল হামাদ বলেন, “যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটিতে শ্রমিকরা থাকতো। সেখানে বহু শ্রমিক ছিল। তাদের অনেককে উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
ভবনগুলোতে একসঙ্গে অনেক শ্রমিককে না রাখার জন্য তারা ‘সবসময় সতর্ক করে আসছেন’ বলে দাবি করেছেন তিনি।
কুয়েত টাইমস জানিয়েছে, অগ্নিকা-ে মৃতের সংখ্যা ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। ওই ভবনটিতে প্রায় ১৬০ জন শ্রমিক বসবাস করত বলে জানা গেছে। তারা সবাই একই কোম্পানির অধীনে কাজ করত।
ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের্ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইদ আল-ওয়াইহানের বরাত দিয়ে আরব টাইমস জানিয়েছে, আল-মানগাফের অগ্নিকা-ের ঘটনায় আহতদের মধ্যে আরও চারজনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।
কুয়েত দমকল বাহিনীর জনসংযোগ বিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আল-গারিব জানিয়েছেন, দমকল বিভাগ ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেয় আর দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অধিকাংশই ঘুমের মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে ভবনটি থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাসিন্দাকে বের করে আনা হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অগ্নিদগ্ধদের বিস্তৃত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত অন্তত ৪৩ জনের মধ্যে চারজন মারা গেছেন, আরও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কী থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল তা র্নিধারণ করতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত চারজন ভারতীয় আছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply