সত্যখবর ডেস্ক: কুষ্টিয়ায় পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার ইউপি সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
সোমবার (১ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে আব্দালপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিষ্ণুদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আহত অবস্থায় ১৫ জন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়ার ইবি (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান।
আহতরা হলেন- বিষ্ণুদিয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত মনোহর মন্ডলের ছেলে মজনু হক, তার ছোট ভাই বজলুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, বশির আলী, মজনু হকের ছেলে রাশিদুল ইসলাম, ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলাম, রফিকুল ইসলামের ছেলে আসিফ, জিয়ার আলীর ছেলে ইদবার ও নিকবার, নজরুলের ছেলে জহুরুল ইসলাম, ইসলামের ছেলে আরমান, জুলমতের ছেলে ঝন্টু, তরিফ আলির ছেলে লাল্টু ও রফিকুলের স্ত্রী আফরোজা খাতুন।
পুলিশ, আহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে আব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরব আলী চেয়ারম্যানের গ্রুপের সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলামের গ্রুপের বিরোধ চলে আসছিল। সোমবার ভোর ৪টার দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরব আলী চেয়ারম্যান ও তার শতাধিক লোকজন হাঁসুয়া, ডাসা, চাইনিজ কুড়াল, হাতুড়ি, শাবল, রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করে। এতে নাজমুল মেম্বার গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আরব আলী ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
আহত মজনু হক বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরব আলী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বদিউর জামান, আরমান, কোরমান, জামাত আলী, বাটুল, সায়েম, নিজাম, নিকামদ্দিন, অবিদ ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন। তাদের হামলায় আমিসহ ১৫ জন আহত হয়েছি। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার ও দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বলেন, প্রায় ১৫ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের শরীরে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কয়েকজনের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত।
ইবি (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনা ঘটেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply