1. mmisuk010@gmail.com : Misuk joy : Misuk joy
  2. admin@wordpress.com : root :
  3. rijukushtia@gmail.com : riju :

কুষ্টিয়ার রাইস মিলগুলোতে মানা হচ্ছে না আইন, দুর্ভোগে জনসাধারণ

  • আপডেট টাইমঃ শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২
  • ৭৫ মোট ভিউ

উইমেন ডেস্ক : বাড়িঘর- গাছপালা সব ঢাকা পড়ে যাচ্ছে কালো ছাই আর ধুলায়। এলাকার জলাধারগুলো পচা পানি আর তুষ-ভুসিতে জমাট বাঁধা নর্দমায় পরিণত হয়েছে। এতে করে অসহনীয় জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার বটতৈল ইউনিয়নের কবুরহাট, দোস্তপাড়া, খাজানগর ও পোড়াদহ এলাকায়।

এই সব এলাকায় সারাবছরই দূষিত বায়ু আর পানিতে বসবাস এখানকার বিশাল জনগোষ্ঠীর। ফসলের মাঠেও দূষিত পানির বিড়ম্বনা। ধান থেকে চাল প্রক্রিয়াজাত করা ও আটা উৎপাদন কাজে এই এলাকায় গত ৪৫ বছরে ধরে গড়ে উঠেছে প্রায় সাড়ে চারশো ছোট বড় রাইচমিল- কলকারখানা।

এর মধ্যে বড় আকারের অটোমেটিক রাইস মিলই আছে ৫৫টি। যার অধিকাংশই মানছে না পরিবেশ সংরক্ষণ ও শ্রমিক নিরাপত্তার মতো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। ভারী এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের একটিরও নেই বর্জ্য শোধনাগার।

মিলের দুর্গন্ধযুক্ত দূষিত পানি পাইপের মাধ্যমে সরাসরি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের খালে। যা চলে যাচ্ছে কৃষি জমিতে, এমনকী মাছ চাষের পুকুর-জলাশয়েও। ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, মরে ভেসে উঠছে মাছ। দূষিত পানির সঙ্গে ধানের কুড়া ও ছাই থাকায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে খালগুলো। আবার কোনো কোনো রাইস মিল দখলে নিয়েছে খালের জায়গা। দূরের রাইস মিলও পাইপ লাইনে বর্জ্যের সংযোগ রেখেছে খালের সঙ্গে। খাজানগর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার কোনো পুকুরেই মাছ বাঁচে না। কয়দিন পরপরই মাছ মরে ভেসে ওঠে। কৃষি কাজে শ্রমিক পাওয়া যায় না। জমিতে দূষিত পানি থাকায় ভয়ে হাত দিতে চান না তারা। চর্ম রোগ হয়।

তিনি আরও বলেন, এসব নিয়ে মিল মালিকদের সঙ্গে স্থানীয়দের প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয়। তারা বারবার দূষিত পানি না ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও মানেন না।

বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিন্টু ফকির উদ্বেগ প্রকাশ করে ও এলাকাবাসীর ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ছাই এবং কারখানার অন্যান্য বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু মিল মালিকদের এ বিষয়ে সদিচ্ছা না থাকায় কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, এখানকার মাত্র ৩০টি কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে। বাকিগুলো ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে। পরিবেশ দূষণের কথা স্বীকার করে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল গাফফার বলেন, খাজানগরের চালকল মালিকদের একাধিকবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, যত্রতত্র গড়ে ওঠা ধান-চাল সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলো ব্যাপক দূষণ ছড়াচ্ছে প্রকৃতিতে।

ব্যাপারি এগ্রো ফুড প্রোডাক্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন ব্যাপারি বলেন, এর আগে কলকারখানা কম ছিল, এখন বেশি হয়ে যাওয়ায় দূষণের পরিমাণ দিনদিন বাড়ছেই। সময়ের সঙ্গে বেড়েই চলেছে চালকলসহ সংশ্লিষ্ট নানা কারখানা, এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত অনিয়মের লাগাম না টানলে সামনের দিনগুলোতে আরও মারাত্মক পরিবেশ দূষণের শিকার হতে পারে এই এলাকার মানুষসহ জীব-বৈচিত্র্য।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের (খামারবাড়ি) অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (ফসল) বিষ্ণু পদ সাহা জানান, কলকারখানার এসব বর্জ্যরে মধ্যে আয়রন, লেডসহ ক্ষতিকর নানা উপাদান থাকতে পারে। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। আবার দূষিত পানির কারণে ফসলের উৎপাদনও কম হবে। কলকারখানার বর্জ্যের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে এখানকার জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে অবিলম্বে বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটোরাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি মো. ওমর ফারুক বলেন, মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ আমরা করতে চাই না। তিনি বলেন, সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে প্লান্ট বা শোধনাগার নির্মাণ সহজ হবে। আর এটি নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের মানুষ মারাত্মক পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও পড়ুনঃ
© All rights reserved © 2021 | Powered By Sattokhobor Media Ltd
Site Customized By NewsTech.Com