সিরাজগঞ্জে চলন্ত ট্রাকে প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানা নামে এক চালককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ দণ্ড দেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. সোহেল রানা (৩৬) বগুড়া জেলা সদরের আশোকোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মো. মনসুর আলীর ছেলে। মামলার অপর আসামি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার সোবাহানপুর গ্রামের মো. জহুরুল শেখের ছেলে ট্রাকের হেলপার ওহাব শেখ (৩০)। তিনি ২০২৩ সালের ১২ মে জেলহাজতে মারা যান।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ২২ জুন করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছিল। এ সময় স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। চন্দ্রা থেকে প্রতিবন্ধী তরুণীসহ দুজন পুরুষ যাত্রীকে নিয়ে ট্রাকচালক সোহেল রানা ও হেলপার ওয়াহাব শেখ বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। ট্রাকটি সিরাজগঞ্জে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচক্কর পার হলে হেলপার যাত্রীদের জানান ট্রাকটি নষ্ট হয়ে গেছে, সারাতে সময় লাগবে। এ কথা বলে ওই দুই পুরুষ যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। তবে ওই তরুণী ট্রাকের কেবিনে বসে ছিলেন।
পরে হেলপার ওহাব ও চালক সোহেল রানা তরুণীকে ভেতরে রেখে বাইরে থেকে কেবিনের দরজা আটকে দেন। চালক সোহেল রানা তরুণীকে ধর্ষণ করেন। তরুণীর চিৎকারে বাইরে থাকা যাত্রীরা ট্রাকের লুকিং গ্লাস দিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি দেখতে পান। তখন ইউনুস আলী ওরফে সুমন নামে এক যাত্রী ট্রাকের কাছে গিয়ে ধর্ষণের ভিডিওটি মোবাইলে ধারণ করতে থাকেন।
ভিডিও ধারণের বিষয়টি টের পেয়ে চালক ও হেলপার ওই দুই যাত্রীকে রেখেই ট্রাক নিয়ে বগুড়ার দিকে চলে যায়। এ সময় ইউনুস আলী সুমন ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন। পুলিশ কড্ডার মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে চালক-হেলপারকে আটক এবং তরুণীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ট্রাকচালক সোহেল রানা ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক এই রায় ঘোষণা দেন।
Leave a Reply