সিনিয়র রিপোর্টার : চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে গণঅধিকার পরিষদ সরকারের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে, যেখানে তারা জুলাই ৩৬-এর গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা, গুম, খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দ্রুত বিচার দাবি করেছে। এছাড়া, গত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থার অধীনে লুটপাট, অর্থ পাচার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ছাত্র-নাগরিকদের নেতৃত্বে সংঘটিত জুলাই ৩৬’র গণঅভ্যুত্থানে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের দমন-পীড়নে ৮২৬ জন শহিদ হন এবং ১১,৩০৬ জন গুরুতর আহত হন। এমনকি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়ে সরকার বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালায়। অথচ এ ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা এখনো বিচারের বাইরে রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের গাফিলতি এবং অপরাধীদের জামিনে মুক্তির ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদ আরও অভিযোগ করে, ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর ভারতে পালিয়ে গেছেন। সেখান থেকে তিনি দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরিতে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তার উস্কানিতে আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা সারাদেশে নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে হরতাল ও অবরোধের ডাক দিচ্ছে এবং সরকারের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।
গণঅধিকার পরিষদ তাদের স্মারকলিপিতে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে। দাবিগুলো হলো:১. জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের সঠিক তালিকা তৈরি করে তাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা।
২. জুলাই গণহত্যায় জড়িত শেখ হাসিনাসহ সকল পলাতকদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা এবং গণহত্যায় জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
৩. উন্নয়নের নামে গত ১৬ বছরে হওয়া লুটপাট ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিচার নিশ্চিত করা।
৪. দেশের পুনর্গঠনে অভ্যুত্থানের অংশীদারদের নিয়ে একটি জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠন এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
৫. গত ১৬ বছরে সংঘটিত গুম, খুন, এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভুয়া নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা।
স্মারকলিপি দাখিলের উদ্দেশ্য
গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের জনগণ নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকল প্রকার ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ড নির্মূল এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ আল-আমীন বলেন, “যতদিন এ ধরনের অপরাধীদের বিচার না হবে, ততদিন দেশে স্থায়ী শান্তি এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।”
স্মারকলিপিটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply