উইমেন ডেস্ক: বিয়ের দাবিতে বরগুনায় গিয়ে গ্রেফতার হওয়া জামালপুরের সেই তরুণীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ মে) বেলা ১১টার দিকে বরগুনা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহবুব আলম উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
ওই তরুণীর পক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, তরুণীর সঙ্গে শুধু তার প্রেমিক মাহমুদুল হাসান নয়, হাসানের পুরো পরিবার প্রতারণা করেছে। মাহমুদুল হাসান বিয়ের কথা বলে মৌয়ের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বছরের পর বছর একসঙ্গে থেকে তার আগের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে। এরপর হাসান তাকে বিয়ে করবে বলে দিনের পর দিন ঘুরিয়েছে। তাই ওই তরুণী বাধ্য হয়ে বরগুনায় এসেছে।
আইনজীবী মজিবুল বলেন, হাসানের পরিবার বিয়ের কথা বলে তরুণীর পরিবারকে আসতে বলে উল্টো তাকে গ্রেফতার করিয়েছে। পুরো বিষয়টি তিনি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
পরবর্তীকালে তারা পাল্টা আইনি পদক্ষেপে যাবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তরুণী কারাগার থেকে বের হওয়ার পরে তার ও তার পরিবারে সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপে যাবেন তারা।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইমুল ইসলাম রাব্বি বলেন, বিয়ের দাবিতে এসে ওই তরুণী আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন, যা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মধ্য পরে। এছাড়া তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরো পরিবারকে জিম্মি করেছিল সে। তাই আদালতের মাধ্যমে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তারা। আদালতে জামিনে কোনো বাধা দেননি তারা। তারাও চান তরুণী তার পরিবারের সঙ্গে থাকুক।
গত ২৮ এপ্রিল নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী দাবি করা এক তরুণী বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজারের কাঠপট্টি এলাকার বকুল ভিলায় বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন । তখন তিনি দাবি করেন, ওই বাড়ির মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তার ঢাকায় পরিচয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হলে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তিন বছর ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এখন মাহমুদুল তাকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তিনি ওই বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
এরপর গত ২ মে তালা ভেঙে সেই তরুণীকে প্রেমিকের ঘরে ঢুকিয়ে দেয় এলাকাবাসী । সেদিন দুপুরের পর চান্দখালী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সোনা মোল্লার উপস্থিতিতে এলাকার অর্ধশত মানুষ তালা ভেঙে তাকে ঘরে ঢুকিয়ে দেন।
এ ঘটনায় গত ১০ মে মাহমুদুল হাসানের বাবা মোশাররফ হোসেন খান তরুণীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে ওইদিনই বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলমকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম। একই সঙ্গে একসপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেন তিনি। পরে শুক্রবার (১৩ মে) সকালে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।
Leave a Reply