বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দাদনের ১০ হাজার টাকা দিতে না পারায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা দামের গরু নিয়ে গেছেন এক শ্রমিক নেতা। যমুনা নদীর বাঁধে আশ্রয় নেওয়া এক শ্রমিকের বাড়ি থেকে পরিবারের শেষ সম্বল গরু জোর করে নিয়ে যান ওই নেতা।
এ ঘটনায় ওই শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে আজ শনিবার দুপুরে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই শ্রমিকের নাম আবু তালেব। তিনি উপজেলার যমুনা নদীর ভাঙন জনপদ ভান্ডারবাড়ি গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত শুকুর আলী ওরফে পাগাইলার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবু তালেবের বাবা শুকুর আলীর (৮৬) একসময় বসতবাড়ি, ধান, গরু, জমিসহ সবই ছিল। কিন্তু যমুনার ভাঙনে তার সবকিছু বিলীন হয়ে যায়। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভান্ডারবাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেন তিনি। বয়সের ভারে ন্যুব্জ শুকুর আলী অভাব-অনটনের সংসারের হাল ধরেন ছেলে আবু তালেব। দিনমজুরের কাজ করে করেন তালেব।
এ অবস্থায় প্রায় পাঁচ মাস আগে যমুনা নদীর তীররক্ষা প্রকল্পের কাজে অগ্রিম শ্রম বিক্রি করে আবু তালেব একই এলাকার ভুতবাড়ি গ্রামের শ্রমিক নেতা আল-আমিনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাদন নেন। কিন্তু আল-আমিনের কাজ করে টাকা শোধ দিতে পারেনি আবু তালেব।
বিষয়টি নিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর উভয় পরিবারের মধ্যে বৈঠক হলে আবু তালেব ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। আর বাকি টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সময়মতো সেই টাকা পরিশোধ করতে পারেননি আবু তালেব। ফলে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় আবু তালেবের বাড়ি থেকে গরুটি নিয়ে যায় আল-আমিন ও তার লোকজন। এ ঘটনায় আবু তালেবের বাবা শুকুর আলী বাদী হয়ে আল-আমিন ও তার ছেলে জানে আলমের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শ্রমিক সর্দার আল-আমিন বলেন, শ্রমিকের কাজ করে দেওয়ার কথা বলে অগ্রিম টাকা নিয়ে কাজও করে দেয়নি এবং টাকাও দিচ্ছে না। অনেক দেনদরবার করে কাজ হয়নি। তাই আবু তালেবের বাড়ি থেকে গরু নিয়ে এসেছি। সে টাকা পরিশোধ করে গরুটি ফেরত নিয়ে যাবে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একজন পুলিশ (এসআই) কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply