সত্যখবর ডেস্ক: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তেকালা গ্রামের সাবেক মেম্বার লিপ্টন হোসেন তোতা ওরফে জমি খেকো তোতা নিজের কুকর্ম ঢাকতে লোক দেখানো সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে দৌলতপুর রিপোর্টার্স ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন লিপ্টন হোসেন তোতা। এ সময় জমি খেকো তোতার সাথে ছিলেন তার চাচা রুহুল আমিন, মৃত ছাদেক আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, মৃত ফকির মালিথার ছেলে শহিদুল মালিথা।
উল্লেখ্য, তেকালা গ্রামের সাবেক মেম্বার লিপ্টন হোসেন তোতাগং ওই এলাকার বেশ কয়েকজনের একাধিক মৌজার জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। তারপরই নিজের কুকর্ম ঢাকতে লোক দেখানো এই সংবাদ সম্মেলন করেন জমি খেকো তোতা।
সাবেক মেম্বার লিপ্টন হোসেন তোতা ওরফে জমি খেকো তোতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের হুবহু তুলে ধরা হলো :
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ তেকালা গ্রামের সাবেক মেম্বার লিপ্টন হোসেন তোতা গং এর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, তেকালা গ্রামের মৃত বদিউর রহমান শাহ্’র ছেলে মৃত তারাচাঁদ শাহ্’র তেকালা মৌজার ৫৪৬নং আর এস খতিয়ানে জেঃ এলঃ ১১৬ নং এর ৫০টি দাগে মোট ২০ একর ৯৮ শতাংশ জমি। একই মৌজার ৫৪৮নং আর এস খতিয়ানে তারাচাঁদ শাহ্’র ২টি দাগে ভিটা জমি রয়েছে ২৮ শতাংশ। আর এস খতিয়ান ৫৫০নং এর ৩টি দাগে ধানী জমি রয়েছে ৩ একর ৩৮ শতাংশ।
তারাচাঁদ শাহ্’র ছেলে জফের আলী’র একই মৌজার আর এস খতিয়ান ৪৮০নং এর ১টি দাগে ৩৯ শতাংশ বাগান, আর এস খতিয়ান ৪৮১ নং এর ১২টি দাগে ধানী, ভিটা ও বাগান জমি রয়েছে ২ একর ২ শতাংশ। অন্যদিকে, তারাচাঁদ শাহ্’র ছেলে জফের আলী, আতাহার আলী, এমাদুল হক ও দুঃখী শাহ্’র একই মৌজার ৪৮৮নং আর এস খতিয়ানে ২টি দাগে ধানী জমি রয়েছে ১ একর ৭১ শতাংশ এবং জফের আলী, আতাহার আলী’র একই মৌজার ৪৭৯ নং আর এস খতিয়ানে ৫টি দাগে বাড়ি ও ধানী জমি রয়েছে ১ একর ১৭ শতাংশ। উপরোক্ত জমির অধিকাংশই এখন দখলদারদের দখলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই জমির বেশির ভাগই রয়েছে দখলদারদের দখলে। তারাচাঁদ শাহ্’র ওয়ারিশরা জানায়, আমাদের এই জমি নিয়ে মামলা হয়েছে। বহুদিন থেকেই তিনটি রেকর্ড-ই আমাদের নামে। দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের মৃত কাশেম আলীর ছেলে সোনারুল ইসলাম দিগড়, তেকালা গ্রামের গোলাম ছরয়ারের ছেলে সাবেক মেম্বার লিপ্টন হোসেন তোতা, কাশেমের ছেলে রুহুল, রেজীক আলীর ছেলে আব্দুল হায়, আহসান হাবিব আছান, মান্নান আলীর ছেলে রতন আলী দিগড়, মহতলেব আলী, মৃত দুলাল হোসেনের ছেলে মিল্টন, মৃত সাদেকের ছেলে রফিকুল ইসলাম, মৃত রেজাউল হকের ছেলে টিপু সুলতান, সাহাদুল মালিথা, মৃত রমজানের ছেলে নবী, মৃত নায়েব আলীর ছেলে সাহেব আলী, মৃত খোয়াত আলীর ছেলে সাজ্জাদ আলী, মৃত রমজান আলীর ছেলে মাহাবুল ইসলাম, মৃত দাউদ আলীর ছেলে রাজ্জাক আলী, মৃত মাছের আলীর ছেলে ভাষান আলী, মৃত রহমানের ছেলে জালাল উদ্দিন, নওসাদ আলী, মৃত নাজির কামারের ছেলে কুদু কামার দিগড়, মৃত বক্সের ছেলে আজগর আলী, মৃত আজগরের ছেলে আমিরুল ইসলাম, মৃত রকাত আলীর ছেলে আজিরুল ইসলাম, মৃত নাজির কামারের ছেলে নায়েব কামার, মৃত সাদেক আলীর ছেলে ওহাব মাষ্টার ও ইসাহক আলীর ছেলে এফজেল মিলে জোরপূর্বক ভাবে দীর্ঘদিন ধরে জমি দখলে নিয়ে রেখেছে। এই জমির খাজনা-পাতি আমরা দিই। এ পর্যন্ত ওরা খাজনা দিতে পারি নাই। এই জমি নিজেদের দখলে রাখার জন্য নিজেরা মার্ডার করে আমাদের নামে মামলা দিয়ে আসামী করে এলাকা ছাড়া করে যাতে আমরা জমির উপর দখলে না যেতে পারি। এতো জমি থাকা শর্তেও আজ আমরা নিঃস্ব।
এলাকাবাসী জানায়, জিনিসটা বাস্তব, আমি জন্মের পর থেকে দেখছি এই জমি তারা চাঁদ শাহ্’র। তিনি ২০-৩০ বছর আগে মারা গেছে। এর পরে গোলাম মেম্বার গং দখল করে নেই। পরে গোলাম মেম্বার মারা গেলে তার ছেলে সাবেক মেম্বার লিপ্টন হোসেন তোতা গং দখল করে খাচ্ছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, তারাচাঁদ শাহ্’র অনেক জমা-জমি ছিল। এই দখলদারদের জন্য আজ তার ওয়ারেশরা সর্বশান্ত হয়ে গেছে।
অভিযুক্ত তোতা মেম্বার বলেন, আমার বাপ-দাদারা এই ভোগ দখল করে আসছে। এই জমি বিনিময় সূত্রে পাওয়া। জমির কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র সব আদালতে জমা আছে। এসব বিষয়ে আমি আপনার সাথে কথা বলতে পারবো না। এ বিষয়ে আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি
সহকারী ইলিয়াস হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত খাজনা দিচ্ছে তারাচাঁদ শাহ্’র ওয়ারেশরা। যেভাবে দখলদাররা জমি দখল করে রেখেছে সেভাবে তাঁরাও জোর করে দখল করে নিক। এছাড়া আমি আর কি বলব।
Leave a Reply