দৌলতপুর প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের হাতে দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছে রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক ও সেবা গ্রহিতারা।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে দৌলতপুরের সদ্য বদলি হওয়া সাব-রেজিস্টার আনোয়ার হোসেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বড় বাবু মুন্নি আরা খাতুন, দলিল লেখক সমীতির সাবেক সভাপতি বিল্লাল হোসেন, স্থানীয় ক্যাডার মিজানুর রহমান মিজু ও সিন্ডিকেটের মুল হোতা স্ট্যাম্প ভান্ডার নুরুজ্জামান এখানকার দলিল লেখক ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে দলিল রেজিস্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসছেন। আর এই সিন্ডিকেটকে গোপনে মদদ দিচ্ছে উপজেলা আওয়ামিলীগের দুই ভাইটাল নেতা।
সুত্র বলছে দলিল রেজিস্ট্রি করতে প্রতি দলিলে ২ হাজার থেকে ২৫’শ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হয় তাদের। কেউ যদি চাঁদার টাকা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ঔই দলিল লেখকের দলিল রেজিস্ট্রি হয় না। তাছাড়া ওই সিন্ডিকেটের আছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী ও কিশোর গ্যাং। যাদের প্রতি সপ্তাহে মোটা অংকের টাকা দিয়ে পোষেন এই নুরু। জানাগেছে ইতি পুর্বে চাঁদা না দেয়ায় কয়েক জন দলিল লেখকে প্রকাশ্য দিবালোকে বেধড়ক মারধোর করে রক্তাক্ত জখম করে। কেউ থানায় অভিযোগ করলে সেই দলিল লেখকের দলিল রেজিস্ট্রি হয় না। গত সোমবার বদলির আদেশ হয় দৌলতপুরের সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্থ সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেনের। আর সেখানেই বাদে বিপত্তি।
সোমবার অফিসে এসে সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন আমার বদলি হয়ে গেছে আর কোন দলিল রেজিস্ট্রি করবো না। এ সময় সাধারণ দলিল লেখক ও সেবা নিতে আসা মানুষ ফিরে যায়। অথচ ঐদিন দুপুর পর থেকে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে ১’শ টিরও বেশি দলিল রেজিস্ট্রি করেন সাব-রেজিস্ট্রর। পরদিন মঙ্গলবারও তিনি একই পন্থায় কিছু ব্যক্তির দলিল রেজিস্ট্রির প্রস্তুতি নেই। এ সময় উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদেরের এক আত্মীয় দলিল করতে আসেন। অথচ সাব রেজিস্টার তার দলিল করবে না বলে জানান। এ সময় যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের অফিসে গিয়ে নুরু ও সাব-রেজিস্ট্রিার দেন দরবারে অন্যান্য লোকের দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে। তিনি তখন এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ওই সিন্ডিকেটের ক্যাডার বাহিনীরা শুরু করে হট্টগোল। পরে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এখানে চাঁদাবাজি হয়ে আসছে। আমি নিজেও একাধিক বার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। ঘটনার দিন আমার এক আত্মীয় একটা দলিল রেজিস্ট্রির জন্য আসেন কিন্তু তার দলিলটা রেজিস্ট্রি করেনি সাব-রেজিস্টার। তখন আমি গিয়ে দেখি গোপনে অনেকগুলো দলিল রেজিস্ট্রি করছেন তিনি। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে এই সিন্ডিকেটের ক্যাডার বাহিনীরা হট্টগোলের সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে ওইসব সিন্ডিকেটের সদস্য ও দৌলতপুরের সদ্য বদলিকিত সাব রেজিস্টার আনোয়ার হোসেনের মুঠো ফোনে ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পাওয়ার কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য: এই মাসের প্রথম সপ্তাহে আগের দুর্নীতিগ্রস্থ দলিল লেখক সমিতির কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করে সাধারণ দলিল লেখকরা।
Leave a Reply