নারী উদ্যোক্তাকে সরাসরি ও মুঠোফোনে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোরশেদ আহমেদকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর বদলি করা হয়েছে। গত সোমবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাহানা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তার বদলির তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে বদলি করা হলো। গত বুধবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতিউর রহমান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা এক নারী উদ্যোক্তাকে সরাসরি ও মুঠোফোনে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোরশেদ আহমেদ। অভিযুক্ত কর্মকর্তার বাসভবনে গোপনে একান্তে সাক্ষাৎ না করলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সকল সুবিধা থেকে ওই নারীকে বঞ্চিত করা এবং ঋণ পাশ না করারও হুমকি দেন তিনি।
এসব অভিযোগ তুলে গত ৫ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারী উদ্যোক্তা। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে।
এরপর ৭ এপ্রিল ওই কর্মকর্তার বদলির আদেশ জারি করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর কুমারখালী উপজেলায় যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মোরশেদ আহমেদ। তিনি কুষ্টিয়া ডিসি কোর্টের সামনে সাদ্দাম বাজার এলাকার বাসিন্দা। এর আগে তিনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সেখানেও একাধিক নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের ২৪ মার্চ থানায় এক নারী ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপর তিনি কুমারখালীতে যোগদানের পর থেকেই নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সেই পুরোনো আচরণ বহাল রাখেন বলে একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ দেওয়া ওই নারী উদ্যোক্তা বলেন, সম্প্রতি যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তিনি প্রথমে সরাসরি অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে শহরের বাড়িতে ডাকেন। সেখানে না গেলে মুঠোফোনে বহুবার কুপ্রস্তাব ও বিভিন্ন হুমকি দেন।
পরে বাধ্য হয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ বদলির খবর শুনে খুবই আনন্দিত।
তার ভাষ্য, ওই কর্মকর্তা যখন যেখানে চাকরি করেছেন, সেখানেই মেয়েদের উত্ত্যক্ত করেছেন। এ ধরনের কর্মকর্তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।
এদিকে ওই কর্মকর্তার বদলি সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতিউর রহমান। তিনি বলেন, এক নারী উদ্যোক্তার করা অভিযোগের একটি কপি দপ্তরে এসেছে। তবে কী কারণে বদলি করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
Leave a Reply