উইমেন ডেস্ক: রংপুরের কাউনিয়ায় একটি পাটের কারখানায় নাইট শিফটে কাজ করার সময় শারীরিক প্রতিবন্ধী (১৫) এক শ্রমিককে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাফিজুল নামে কারখানার এক শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার ১৬ অক্টোবর দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ১২ অক্টোবর দিনগত রাতে হারাগাছ পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চেংমারী মহল্লার আরএস (রংপুর জুট প্রসেসিং মিল) কারখানায় ধর্ষণের ঘটনা। তবে সালিশ বৈঠকের নামে তা ধামাচাপার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে না নেওয়ায় ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মামাকে মারধরে অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হারাগাছ পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোরী ওই জুট মিলে কাজ করে। তার বাবা মৃত। ১২ অক্টোবর নাইট শিফটে কাজ চলাকালে রাত ২টার দিকে খাবার বিরতিতে বাইরে বের হয় মেয়েটি। খাবার শেষে কাজে ফিরে যাওয়ার সময় সোয়া ২টার দিকে ওই কারখানার তিন শ্রমিক হাফিজুল, ঝন্টু ও নাজমুল তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে।সেখানে তিন যুবকের মধ্যে একজন ধর্ষণ করেছেন এবং বাকি দুজন মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।
ঘটনার পরদিন সকালে মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে তার মা ও মামাকে জানায়। বুধবার (১৩ অক্টোবর) মেয়েটির মামা কারখানার ব্যবস্থাপক বিপ্লবকে বিষয়টি জানান। রাতে আবারো ওই তিন যুবক কাজে যোগ দিলে বিপ্লব তাদেরকে ডেকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা ধর্ষণের চেষ্টা ও ভিডিও করেছেন বলে স্বীকার করেন।ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই মেয়েটির সঙ্গে তিন যুবকের একজনকে দিয়ে বিয়ের আলোচনা শুরু করে একটি পক্ষ।
একপর্যায়ে শুক্রবার রাতে ওই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কারখানা চত্বরে সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে বিয়ের আলোচনার পরিবর্তে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনা মীমাংসার প্রস্তাব দেন নজরুল ইসলাম। এতে মেয়েটির অভিভাবকরা রাজি না হলে নজরুল ইসলাম মেয়েটির বড় বোন ও তা মামাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করা হয়।এরপর সেখান থেকে বের হয়ে রাত ২টার দিকে থানায় গিয়ে ওই তিন যুবককে আসামি করে মামলা করেন মেয়েটির মা। এছাড়া মারধরের অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।
মেয়েটির মা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক কাউন্সিলর তাদের ডেকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে মারধর করেছেন। তিনি এ ঘটনায় ধর্ষকসহ কাউন্সিলরের বিচার দাবি করেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে বিষয়টি জানানো হলে আমি তাদেরকে সালিশের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বলি। কিন্তু তারা তা না করায় একটু চড় থাপ্পড় মেরেছি।
হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত না। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়েটাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply