চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাংগা গ্রামে পিন্টু হত্যাকাণ্ডের পর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী দ্রুত বিচার ও প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছেন।
গত ১২ জানুয়ারি রাতে পিন্টু (পিন্টু সোর্স নামে পরিচিত) ও তার সঙ্গী বাদশা মোটরসাইকেলে চরবাগডাংগা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে লতিফ মিষ্টারের বাগানের কাছে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। পিন্টুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয় এবং বাদশাকে আটকে রাখা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পিন্টু।
মূল আসামিরা অধরা, অপপ্রচারের অভিযোগ
হত্যাকাণ্ডের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় ২০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, একটি কুচক্রী মহল ভুয়া তথ্যের মাধ্যমে গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে মূল আসামিদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। তারা মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত উদ্দেশ্য ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
পিন্টুর পরিবারের ভাষ্যমতে, তিনি মাদক কারবারি ও চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতেন। এ কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি শাহিদ রানা টিপু, মুবারক গুধা ও মিজানসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়।
পিন্টু হত্যা মামলার মূল ১, ২ ও ৩ নম্বর আসামি যথাক্রমে শাহিদ রানা টিপু, মুবারক গুধা ও মিজান। তাদের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ৮ দিন পার হলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য ও গ্রেপ্তার অভিযান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি রইস উদ্দিন জানান, পিন্টু হত্যা মামলায় একজন আসামি মতিউর রহমান মতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।
এদিকে, এলাকাবাসী দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে অপরাধীরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পালিয়ে যেতে পারে, যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হবে।
দ্রুত বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া
চরবাগডাংগা ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল ইসলাম বলেন, “হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীদের আড়াল করতে একটি মহল মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রশাসনকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”
এলাকাবাসীর দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে মূল আসামিদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের আওতায় আনে, যাতে এলাকাবাসী স্বস্তি পেতে পারে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply