দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি আবারও রাজপথের আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে। দলটির সব কার্যক্রম এখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে। ‘২০২৫ সালের শেষের দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়’-নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারছে না দলটি। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। দাবি আদায়ে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে সভাসমাবেশের পরিকল্পনা করছে দলটি। উদ্দেশ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের ‘ধীরে চলো নীতি’ চাপে রেখে রোডম্যাপ আদায়ের পাশাপাশি নির্বাচনি প্রস্তুতি সেরে নেওয়া।
সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি : জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে মাঠে নামছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী মাস থেকে আস্তে আস্তে মাঠে নামবে দলটি। জানুয়ারির মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না পেলে ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে সভাসমাবেশের পরিকল্পনা করছে দলটি। উদ্দেশ্য, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টি করে সরকারকে নির্বাচনের পথে রাখা। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, দ্রুত নির্বাচিত সরকার গঠন করা না গেলে দেশিবিদেশি নানা ষড়যন্ত্রে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে। এ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে গতকাল সমমনা দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে দলটি। তারা বলছে, নির্বাচন নিয়ে তারা সরকারকে সহায়তা করতে চায় এবং সেটা করছেও। এজন্য যৌক্তিক সময় দিচ্ছে। তবে ১৫-১৬ বছর ধরে ভোটাধিকারবঞ্চিত জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ। তা ছাড়া এতদিন নির্বাচনের ওপর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোও আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল, তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন সরকারের উচিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। তারা বলছে, মেয়াদের প্রায় সাড়ে চার মাস অতিবাহিত হলেও সরকার সুনির্দিষ্টভাবে কী করতে চায়, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এটিই দলটির জন্য হতাশার। বিএনপি এ সরকারকে ব্যর্থ দেখতে চায় না। বিএনপি মনে করে, নির্বাচনই এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য এবং নির্বাচনমুখী সংস্কারই প্রধানতম সংস্কার হওয়া উচিত।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়েছেন মাত্র। তাতে সুস্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ নেই। কোন কোন ক্ষেত্রে সংস্কার করা হবে, সেজন্য কতটা সময় প্রয়োজন, তা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট নয়। আশা করি তিনি সংস্কারের সময় ও নির্বাচনের সময় সুনির্দিষ্ট করে একটি রোডম্যাপ দেবেন।’
Leave a Reply