কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান নগদ টাকা ও ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় বিএনপি নেতার ছেলে ও স্ত্রীকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) ভোরে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীচর এলাকায় তার বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভোরে মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকতের বাড়িতে অভিযান চালান যৌথবাহিনী। অভিযানে তার বাড়ি থেকে ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ নগদ টাকা ও এক হাজার পিচ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। পরে লিয়াকতের স্ত্রী কাজল রেখা (৪৬) ও ছেলে আব্রাহাম লিংকনকে (২০) আটক করা হয়। লিয়াকত মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযানের সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না।
স্থানীয়রা বলেন, লিয়াকত মেম্বার বৈরাগীর চর এলাকা সহ আশেপাশের এলাকায় মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা করে। শুধু তাই-ই নয়, সে আশেপাশের জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসা করে। অবৈধভাবে ভারত থেকে সিমান্ত দিয়ে অস্ত্র মাদক আনেন এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা করে আসছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কারণ সে বিএনপির নেতা। প্রভাবশালী বিএনপির নেতাদের সাথে তার খুব ঘনিষ্ঠতা। সে মাদক ও অস্ত্রের ডিলার। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তার স্ত্রী ও ছেলেকে আটক করে নিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা আরও বলেন, আটক লিয়াকত আলীর স্ত্রী কাজল রেখা শিক্ষকতার আড়ালে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত। তার ছেলে আব্রাহাম লিংকনও তাদের ব্যবসার সাথে জড়িত। সে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে পড়ালেখা করে। লিয়াকত সারাদেশ ব্যাপী মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা করে। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর লিয়াকত তার বাড়ির সামনে লোক দেখানো গরুর ফার্ম করেন। ফার্মের আড়ালে অস্ত্র মাদক ব্যবসায় আরও জোর দেন। এতে এলাকায় মাদক ও অস্ত্র ছড়িয়ে গেছে। স্থানীয়রা চরম অস্বস্তিতে পড়েছে। লিয়াকতের ভয়ে প্রশাসনের কাছে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পায়না। যৌথ বাহিনীর এই অভিযানে এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। সবাই যৌথ বাহিনীর প্রশংসা করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য লিয়াকত আলীর সাথে যোগাযোগ চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি৷
এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদ সরকার মঙ্গল বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে সাবেক ইউপি সদস্য লিয়াকতের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ নগদ টাকা ও এক হাজার পিচ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় তার স্ত্রী ও ছেলেকে আটক করা হয়েছে। এবিষয়ে মামলা প্রস্তুতি চলছে। আজকেই আসামিদের কারাগারে পাঠানো হবে।
Leave a Reply