উইমেন ডেস্ক : ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানার বাঁশঘাটা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন স্কুলশিক্ষক জুলফিকার আলি মণ্ডল (৭২) ও তার আরেক ভাই মাহতাব মন্ডল (৬৮)। তবে তাদের তিন বোন খায়রণ মন্ডল (৬২), ফেরদৌসি মন্ডল (৫০) ও খোদেজা মন্ডল (৬৫) বাংলাদেশের যশোর জেলার বেনাপোল সীমান্তের বাহাদুরপুর গ্রামে বসবাস করেন। একই সঙ্গে তাদের দুই খালা ও এক মামাও বাংলাদেশেই আছেন।
গত শনিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে বার্ধক্যজনিত কারণে জুলফিকার আলী মারা যান। বাংলাদেশে থাকা স্বজনদের ভাইয়ের শেষ মুখ খানা দেখাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে আবেদন জানান মাহতাব। এ নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে আলাপ করে বিএসএসফ।
দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে শনিবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ভাইয়ের শেষ দেখা পেলেন বোনরা। দেখলেন বাংলাদেশে থাকা খালা ও মামারাও। এ সময় পরিবেশ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে।
এদিকে ভাইয়ের শেষ দেখা পেয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এমন উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিন বোন বলেন, ‘আপনাদের মানবিকতার কারণে আমরা আমাদের ভাইয়ের শেষ দেখা পেয়েছি।’
এ বিষয়ে যশোর ৪৯-বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে বেনাপোল সীমান্তের বিজিবির কোম্পানি কমান্ডারকে নির্দেশ দিয়েছি স্বজনদের নিয়ে জিরো পয়েন্টে নিয়ে যেতে। যাতে মৃত ব্যক্তিকে শেষবারের মতো দেখতে পারেন স্বজনরা। সে মোতাবেক তারা ব্যবস্থাও করেছে।
শাহেদ মিনহাজ আরও বলেন, বিজিবি-বিএসএফ সদস্যরা দিনরাত চোখের পলক না ফেলে সীমান্তে মোতায়েন রয়েছে এবং দেশের নিরাপত্তার পাশাপাশি সীমান্তের বাসিন্দাদের সামাজিক মূল্যবোধ ও তাদের ধর্মীয় সুখ-দুঃখের দিকটিও যতœ নিয়ে দেখে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী অসৎ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থাকলেও মানবতা এবং মানবিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে সর্বদা প্রস্তুত থাকে।
Leave a Reply