এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের চেয়ে বেশি।
স্কুলের গ-ি পেরোনো এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে, যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এই হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৪৪৯ জন।
গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে গণভবনে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন।
পরে বেলা সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারছে।
এবার পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে পূর্ণ সময় এবং পূর্ণ নম্বরে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
কোভিড মহামারীতে এসএসসি পরীক্ষার সূচি এলোমেলো হয়ে পড়েছিল। চলতি বছর অনেকটা আগের ধারাবাহিকতায় ফেরে এই পাবলিক পরীক্ষা।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়, শেষ হয় ১২ মার্চ।
এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন পাস করেছে।
এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
এবারও পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা- দুদিক দিয়েই এগিয়ে আছে মেয়েরা।
ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ পাস করেছে।
মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ লাখ ৬ হাজার ৫৫৩ জন।
আর ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ জন।
আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন ছাত্রী এবং ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ছাত্র।
পাসের হার বাড়লেও জিপিএ-৫ কমেছে
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড়ে পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার ২ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়েছে।
পাসের হার বাড়লেও এবার জিপিএ-৫ কমেছে। এ বছর ১১টি বোর্ডে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৫২ জন শিক্ষার্থী। গত বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। সেই হিসাবে এবার জিপিএ-৫ কম পেয়েছে ১ হাজার ৪২৬ জন।
কোন বোর্ডে পাসের হার কত
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী- এ বছর পাসের হারে এগিয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। এরপরই রয়েছে রাজশাহী বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩ শতাংশ। পাসের হারে তৃতীয় বরিশাল বোর্ডে পাস করেছে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ পরীক্ষার্থী।
ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। এছাড়া মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৯২ শতাংশ।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শেষ হয় ১২ মার্চ। এরপর ১৩ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। এতে সারাদেশের ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন।
Leave a Reply