কোভিড-১৯-এর ভয়াবহতা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যু। বাড়ছে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। শুরু হয়েছে লকডাউনও। এই বিপর্যয়ের মধ্যে করোনা আক্রান্ত করোনাক্রান্ত যে সব রোগীরা বাসায় বসে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের জন্য অক্সেজেন সিলিন্ডার বা অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে ‘সংযোগ : কানেক্টিং পিপল’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
গতবছর করোনা মহামারীর শুরু থেকেই করোনা রোগীদের বাসায় বাসায় অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়ার কাজটি শুরু করে সংযোগ। তখন চারিদিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরঞ্জামের সংকট থাকায় মাত্র ১২ টি অিক্সেজেন সিলিন্ডার দিয়ে সংগঠনটি তাদের ঘরে ঘরে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়ার কাজটি শুরু করে।
সম্প্রতি দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আবার সবকিছু ওলটপালট করে দিচ্ছে। বাড়ছে করোনা রোগী। অনেকেরই ঘরে বসে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। কিন্তু সময়মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে অনেক রোগীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে সংযোগ প্রায় ৯৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১৫টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন দিয়ে ঢাকা শহরের মধ্যে করোনা রোগীর বাসায় ২৪ ঘন্টা অক্সিজেন সরঞ্জাম সরবরাহ করছে সংগঠনটি।
সাধারনত বাসায় কোনো করোনা রোগী থাকলে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র প্রদর্শনপূর্বক তাঁকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দরিদ্ররোগীদের জন্য বিনামূল্যে এই সেবাটি সরবরাহ করছে সংযোগ। তবে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল রোগীদের জন্য একটি নূন্যতম সার্ভিস চার্জ নেয়া হচ্ছে, যেটা দিয়ে অক্সিজেন ও সিলিন্ডার সংগ্রহ, সিলিন্ডার স্যানিটাইজ করা, রোগীর বাসায় পৌঁছে দেয়ার কাছে নিয়োজিতদের সম্মানি ও ভাতা দেয়ার কাজে ব্যয় হয়। করোনায় চাকুরি হারানো তরুণরা মানুষের ঘরে ঘরে সংযোগের এই অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়ার কাজটিতে যুক্ত আছে।
করোনারোগীদের বাসায় অক্সিজেন সরঞ্জাম পৌছে দেয়ার এ উদ্যোগ দিন রাত কাজ করছেন প্রকৌশলী আব্দুল খালেক কচি, প্রকৌশলী ইমতিয়াজ মাহমুদ সোহান, প্রকৌশলী মোঃ নাজির হোসেন, প্রকৌশলী বিপ্লব আবদুল্লাহসহ সংযোগ অক্সিজেন সাপোর্ট টিম। তারা করোনায় সংযোগের অক্সিজেন সেবা কার্যক্রম সম্পকের্ বলেন, অক্সিজেন সরঞ্জামের দুষ্প্রাপ্যতার কারনে প্রথম দিকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক মানুষ আমাদের এ উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। দেশ ও দেশের মানুষ আমাদেরকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে দিচ্ছে। আবার অনেকে সিলিন্ডার ও কনসেনট্রেটর মেশিন ক্রয় করার জন্য আর্থিক সহায়তাও করেছেন। যদিও চাহিদার তুলনায় আমাদের এ প্রচেষ্টা নিতান্তই কম, তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রতিদিনই বাড়ছে আমাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার আর কনসেনট্রেটরের সংখ্যা। মানুষের সহযোগিতায় এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আমাদের বিশ্বাস।
Leave a Reply