সত্যখবর ডেস্ক: বাড়িতে লাশের খাটিয়া, কেটে রাখা হয়েছে বাঁশ, কবরস্থানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মরদেহ বহনকারী গাড়ীটি কখন আসবে এই নিয়ে গ্রামবাসী ও স্বজনদের অপেক্ষা।
নিহতের স্বজনদের কান্নার আওয়াজে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। চলছে স্বজন হারানোর আর্তনাদ-আহাজারি।
এ চিত্র কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া পূর্বপাড়ায়। নিহত বকুল বিশ্বাস হাতিয়া গ্রামের মৃত আফতাব বিশ্বাসের ছেলে।
মৃত্যুর ২৪ঘন্টা আগেও নিঃসন্তান চাচির মৃত্যুরপর তার কুলখানির আয়োজনে বকুল বিশ্বাস কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন। সেই আঙ্গিনায় নতুন করে নিহত বকুল বিশ্বাসের দাফন সম্পন্ন করছে তারই স্বজনরা। এই নিয়ে হৃদয় বিধায়ক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের স্বজনদের চিৎকারে শোকে স্তব্দ পুরো এলাকা।
উল্লেখ্য, সোমবার(১৩ মে)রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া পূর্বপাড়া গ্রামে বকুল বিশ্বাস ও ঘাতক শিপন বিশ্বাসের নিঃসন্তান চাচির মৃত্যুরপর তার কুলখানির আয়োজন ও আয়োজনে রান্না ও দাওয়াত দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটি হয় তাদের। কথা-কাটাকাটির এক পযার্য়ে শিপন বিশ্বাসসহ তার ২০-২৫ সহযোগী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বকুল বিশ্বাসের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় বকুল বিশ্বাসসহ কয়েকজন আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বকুল বিশ্বাস মারা যান।
নিহত বকুল বিশ্বাস ও ঘাতক শিপন বিশ্বাস তাদের দুজনের সম্পর্ক আপন চাচাতো ভাই। রাতে বকুল বিশ্বাসের মৃত্যুরপর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহতের চাচাতো ভাই নিয়াজি খান বলেন, এমন হত্যাকান্ড মেনে নেওয়া যায় না। এ হত্যাকান্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি।
ঝাউদিয়া গ্রামের রহমান শেখ বলেন, সামান্য কিছুর জন্য এই এলাকায় আপন ভাই তার শক্র হয়ে যাচ্ছে। হয়ে যাচ্ছে ভাই হত্যার আসামি। এসব থেকে আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।
এ হত্যার পর মরদেহ দাফনের জন্য বাঁশ কেটে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আর কত এমন হত্যা? আমরা গ্রামে শান্তি চাই।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি (তদন্ত) মেহেদী হাসান বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্বে স্বজনদের হামলায় বকুল নিহত হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাতেই পাঠানো হলে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে। কেউ যাতে নতুন করে সংঘর্ষে জড়াতে না পারে এই কারণেই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Leave a Reply