ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চাঞ্চল্যকর তিন খুনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের সশস্ত্র কিলার গ্রুপের রহস্যময় সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ওরফে লিপটন ও তার সহযোগী রাজুকে।
সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তোলা হলে আদালতের বিচারক মোঃ মোখলেসুর রহমান তাদের দুইজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আদালত এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য্য করেন।
গত ৬ জুন কুষ্টিয়ার দূর্বাচারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিন সহযোগীসহ সন্ত্রাসী লিপটনকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনীর একটি দল। লিপটনের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, গুম, অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। তিনি কুষ্টিয়ার আ’লীগ নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর শ্বশানঘাটে কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পুর্ববাংলার সামরিক কমান্ডার হানেফ আলী, লিটন ও রাইসুল ইসলামকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে। হত্যার পর জাসদের কালু বাহিনী পরিচয়ে ঝিনাইদহের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। এঘটনায় নিহত চরমপন্থী নেতা হানেফের ছোট ভাই সাজেদুল ইসলাম ইশা বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই তিন খুনের সঙ্গে লিপটন ও রাজু জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশ সন্দেহ করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শৈলকুপা থানার ওসি (তদন্ত) শাকিল আহম্মেদ জানান, তিন খুনের মামলায় প্রথমে লিপটন ও রাজুকে শোন-এ্যারেষ্ট দেখানো হয়। সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহের একটি আদালতে তোলা হলে দু’জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন গ্রেফতার হলেও কেউ আদালতে ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়নি। মঙ্গলবার (৮ জুন) রিমান্ড লিপটন ও রাজুর আদালতে শুনানী হতে পারে।
জানা গেছে, ৯০ দশকে কলেজ ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি লিপটনের। পরবর্তীকালে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সক্রিয় চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজে নাম লেখান। কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে জামাই বাবুসহ একাধিক ব্যক্তিকে হত্যা করে আলোচনায় আসেন লিপটন। এরপর তার অপরাধ নেটওয়ার্ক আশপাশের জেলায় বিস্তৃত হয়। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী জামানায় কুষ্টিয়ার মাহবুব-উল আলম হানিফকে ফুলের তোড়া দিয়ে প্রকাশ্যে আসেন চরমপন্থী নেতা লিপটন। বড় জনসভা করে হানিফকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর ঢাকায় হানিফের অফিসে বেশির ভাগ সময় কাটাতেন লিপটন। হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে এলাকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।
Leave a Reply