সত্যখবর ডেস্ক: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রেমিককে গাছে বেঁধে কিশোরী প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের চারজনের একজন আওয়ামী লীগ নেতা।
শুক্রবার (৮ মার্চ) রাতে উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার (৯ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোয়ারাবাজার থানায় মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, রাজমিস্ত্রি নুরুজ্জামানের (২৩) সঙ্গে ১৬ বছরের ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের আশ্বাসে শুক্রবার নুরুজ্জামানের সঙ্গে হবিগঞ্জের মাধবপুরের বাড়ি থেকে বের হয় সে। এরপর সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের কামারগাঁওয়ে নুরুজ্জামানের বন্ধু আফাজ উদ্দিনের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় তারা।
সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজারের আজমপুর খেয়াঘাটে একই গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল করিমের সঙ্গে তাদের কথা হয়। আব্দুল করিম তাদেরকে আফাজ উদ্দিনের বাড়ি পৌঁছে দেবেন বলে জানান। কথামতো রাতে সেখান থেকে অটোরিকশায় তারা রওনা দেন।
পথে গ্যাস নেই জানিয়ে অটোরিকশা থামিয়ে মান্নারগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফছর উদ্দিনকে (৩৫) ডেকে আনেন চালক। আফছর উদ্দিন প্রেমিক-প্রেমিকাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে অসামাজিক কাজের অভিযোগ তুলে পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখান।
ভুক্তভোগী আরও জানায়, এরপর পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে প্রেমিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে আফছর উদ্দিন, ফয়জুল বারী (৪৫), কামারগাঁওয়ের ইদ্রিছ আলীর ছেলে আব্দুল করিম (৩৫) ও জালালপুরের হায়াত আলীর ছেলে ছয়ফুল ইসলাম (৩০) ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনার পর একই অটোরিকশায় তুলে প্রেমিক-প্রেমিকাকে কিছু দূর নিয়ে ফেলে রেখে যান অভিযুক্তরা। সেখানে এক গ্রামবাসীর বাড়িতে আশ্রয় নেন ভুক্তভোগীরা। সকালে স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য সিকান্দার আলীর সহযোগিতা চান তারা।
সিকান্দার আলী জানান, শনিবার দুপুরে তিনি দুজন ইউপি সদস্যকে খবর দিয়ে ঘটনা জানান এবং পুলিশকে খবর দেন। বিকেলে পুলিশ এসে ধর্ষণের শিকার ওই মেয়েটিসহ তার প্রেমিককে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়।
আফছর উদ্দিনসহ অভিযুক্ত চারজনের ফোন বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে ফোন বন্ধ করার আগে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে কল দিয়ে নিজেকে রক্ষার অনুরোধ জানিয়েছেন আফছর উদ্দিন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল খালেক বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনায় যুক্ত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাজন কুমার দাস বলেন, খবর পেয়ে দোয়ারাবাজার থানার ওসি ও সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক সার্কেল) ঘটনাস্থলে গেছেন। তারা কিশোরী ও তার প্রেমিকের বক্তব্য শুনেছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply