বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানো ওয়েনাড নাকি, মা সোনিয়া গান্ধীর ছেড়ে দেওয়া আসন রায়বেরেলি? কোনটিকে নিজের সংসদীয় আসন হিসেবে বেছে নেবেন রাহুল গান্ধী? আর কোন আসনটি ছেড়ে দেবেন? লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর কংগ্রেস ও রাহুল নিজে এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গেলেও এখন জোর আলোচনা চলছে এটা নিয়েই।
বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কেরালায় তার প্রথম সফরে গিয়ে মালাপ্পুরম জেলায় একটি রোড শো করেছেন এবং ওয়ানাডের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এবারের লোকসভা ভোটে রায়বেরেলি আসন থেকে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন রাহুল। বিজেপির প্রার্থীকে হারিয়েছেন প্রায় চার লক্ষ ভোটে। অন্যদিকে, কেরালার ওয়েনাডবাসী রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছিল তার সঙ্কটকালে। আমেথিতে যখন নিজের জয় নিয়ে অনিশ্চিত রাহুল, তখন তিনি এসেছিলেন কেরালার এই লোকসভা আসনে। পুরনো কেন্দ্র আমেথি তাকে শূন্য হাতে ফেরালেও ওয়েনাড রাহুলের দু’হাত ভরিয়ে দিয়েছিল। ২০১৯ সালে এই ওয়েনাড থেকে জিতেই সংসদে গিয়েছিলেন রাহুল। ২০২৪ সালেও তার ব্যাত্যয় হয়নি। ওয়েনাডে এ বছরও রেকর্ড ভোটে জিতেছেন রাহুল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানো ওয়েনাড়কে কি ছেড়ে চলে যাবেন রাহুল?
এদিন তিনি জানান, তিনি কোন নির্বাচনি এলাকা ছেড়ে দেবেন- তা নিয়ে তিনি দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। এসময় রাহুল বলেন, তিনি যে সিদ্ধান্তই নেন না কেন, তাতে উভয় আসনের ভোটাররাই খুশি হবেন।
লোকসভায় দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত করার জন্য ওয়ানাডের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই কংগ্রেস নেতা বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে ছিলাম।
মালাপ্পুরমে একটি জনসভায় বক্তৃতাকালে রাহুল গান্ধী বলেন, আমি একটা বিষয়ে দ্বিধান্বিত। সেটা হলো- আমি ওয়েনাডের এমপি হব, নাকি রায়বেরেলির? আমি আপনাদের কাছে যা প্রতিশ্রুতি দেব, তা হল- ওয়েনাড এবং রায়বেরেলি উভয় এলাকার মানুষই আমার সিদ্ধান্তে খুশি হবেন।
কংগ্রেস নেতা ওয়েনাড এলএস আসন থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। ভোটের পর রাজ্যে তার প্রথম সফর এসে।তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোঁচা দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ঈশ্বরের কাছ থেকে নির্দেশনা পান, সেভাবে কিন্তু আমি কিছুই পাই না!যেমন- ‘ঈশ্বর প্রধানমন্ত্রীকে দেশের প্রধান বিমানবন্দর এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আদানির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন!’
রাহুল গান্ধী নিজেকে জণগনের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরে বলেন, আমি কিন্তু সেরকম কিছু না, আমি একজন মানুষ। আমার ঈশ্বর হল আমার দেশের গরিব মানুষ। সুতরাং আমার জন্য এটা সহজ। আমি শুধু সেই লোকগুলোর সঙ্গে কথা বলি এবং তারা আমাকে বলে কি করতে হবে।
নিজের বক্তৃতায় রাহুল আরও বলেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের লড়াই ছিল ভারতের সংবিধান রক্ষার লড়াই এবং সেই লড়াইয়ে ভালোবাসা, স্নেহ ও নম্রতার কাছে ঘৃণা ও অহংকার পরাজিত হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা এসময় কেন্দ্রে গঠিত সরকারকে ‘পঙ্গু’ অভিহিত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এখন তার মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে। কারণ ভারতের জনগণ তাকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে।
এর আগে, এদিন সকালে কেরালার কোঝিকোড়ের কালিকট বিমানবন্দরে রাহুল গান্ধীকে তার দলের নেতারা স্বাগত জানান।
তথ্যসূত্র- দ্য হিন্দু।
Leave a Reply