ক্রিকেটের মতো এবার ফুটবল মাঠেও কনকাসন বদলির অনুমতি দিতে যাচ্ছে ফিফা। কাতার বিশ্বকাপ থেকেই ফুটবলে প্রয়োগ করা হবে এ আইন। ম্যাচে কোনো দলের সবগুলো সাবস্টিটিউট শেষ হয়ে গেলেও, এ সুবিধা পাওয়া যাবে বলে নিশ্চিত করেছেন ফিফার মেডিকেল ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু ম্যাসে। কিন্তু, পুরো বিষয়টিকে ‘হাফ হার্টেড’ বলে, এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে ফুটবলারদের অ্যাসোসিয়েশন ফিফপ্রো।
কনকাসন, খেলার মাঠে একেবারেই নতুন কোনো শব্দ না। ক্রিকেট-ফুটবলে এই তো সেদিন এর আবির্ভাব ঘটলেও, ন্যাশনাল ফুটবল লিগে এই কনকাসনের বদলি অ্যাথলিট পাওয়া যায় ২০১২ সাল থেকেই। এরপর ২০১৮ সালে এর আগমন ঘটে রাগবি মাঠে। মূলত খুব বেশি শরীর নির্ভর খেলা হওয়ায় ইভেন্ট দুটোতে এই কনকাসন বদলির ধারণা চলে আসে অনেকদিন আগেই।
তবে, ক্রিকেট বা ফুটবল মাঠে কনকাসন নিয়ে আলোচনার শুরুটা একেবারেই ক’দিন আগে। মূলত ফিল হিউজের মৃত্যু টনক নড়ায় ক্রিকেট বোদ্ধাদের। এরপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার পর চূড়ান্ত হয় মাথায় আঘাত পেলে বদলানো যাবে ২২ গজের ক্রিকেটারকে।
ব্যাটসম্যানের বদলি হবে, ব্যাটসম্যান আর বোলারের বদলি বোলার। তবে, সম দক্ষতার ক্রিকেটার না থাকলে নেয়া যাবে অন্য কাউকেও, কিন্তু সেক্ষেত্রে তার দায়িত্বটা থাকবে একপাক্ষিক। সূচনার পর থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবারই প্রয়োগ হয়েছে এই আইন।
ক্রিকেট মাঠে প্রয়োগের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বসেছিল ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। এবার তারাও নিয়ে নিয়েছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। জানিয়েছেন মেডিকেল কমিটির নতুন পরিচালক অ্যান্ড্র ম্যাসে। কাতার বিশ্বকাপ থেকেই মাঠে দেখা যাবে এ আইনের প্রয়োগ।
ফিফার মেডিকেল ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু ম্যাসে বলেন, যদি কাউকে নিয়ে সন্দেহ হয়, তাকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দাও। এটাই হবে আমাদের শ্লোগান। আমরা কোনো ফুটবলারকে নিয়ে রিস্ক নিতে চাই না। মাঠে আঘাত পাওয়াটা খুব অস্বাভাবিক নয়, শরীর নির্ভর খেলায় এটা হতেই পারে। কিন্তু, তাদের শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি দেখভাল করা আমদের দায়িত্ব। আমরা খেলাটাকে আরো নিরাপদ করতে চাই।
মূলত ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে মোহাম্মদ সালাহ’র ইনজুরি এবং তাকে সরিয়ে নেয়ার পর থেকেই বিষয়টিতে মনোযোগী হয় ফিফা। এ ধরণের ঘটনায় একটি অতিরিক্ত খেলোয়াড় বদলির সুযোগ দেয়ার কথা তখন থেকেই মাথায় আসে তাদের।
ফিফার মেডিকেল ডিরেক্টর বলেন, ইউসিএল ফাইনালে সেদিন লিভারপুল একটা এক্সট্রা বদলি খেলোয়াড় পেলে, অন্যরকম কোন ফলাফল আসতে পারতো। তাই, এটা খুবই যুক্তিসঙ্গত একটা বিষয়। মাঠে কোনো দলের সাব শেষ হয়ে গেলেও, কনকাসন আইনে এ সুবিধা নিতে পারবে তারা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে আরও বেশি সমতা বজায় থাকবে।
এদিকে, পুরো বিষয়টির কঠোর সমালোচনা করেছে পেশাদার ফুটবলারদের সংগঠন, ফিফপ্রো। তাদের মতে ফিফার এ সিদ্ধান্তটা হাফ হার্টেড। এরকম বদলির চেয়ে, তারা রাগবির মতো টেম্পোরারি সাবস্টিটিউট চেয়েছেন। অথবা মাঠে ডায়গোনোসিসের সময়টা আরেকটু বাড়িয়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে ফিফপ্রো।
Leave a Reply