ব্রাজিলের সাও পাউলু রাজ্যে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে সব আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। ফ্লাইটটিতে ৫৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু থাকার কথা বলা হলেও পরে আরও একজন যাত্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই যাত্রীকে ধরে এ দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের।
ভোইপাস এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইট শুক্রবার ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় পারান রাজ্য থেকে যাত্রী নিয়ে সাও পাউলু শহরের প্রধান বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে ভিনহেদো এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।
ঘটনাস্থল থেকে আসা ছবি ও ভিডিওগুলো দেখিয়েছে, দুর্ঘটনার পর একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষে আগুন জ্বলছে।
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি হঠাৎ করে আকাশ থেকে পড়ে যাচ্ছে, পড়তে পড়তে পাক খাচ্ছে।
এক বিবৃতিতে ভোইপাস এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা পরিষ্কার হয়নি।
ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোর এর ট্র্যাকিং থেকে জানা গেছে, উড়োজাহাজটি সাও পাউলুর কাছাকাছি ৪১০০ ফুট উপর থেকে নিচে পড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এটিআর ৭২-৫০০ উড়োজাহাজটির পড়ার মুহূর্তের শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনা দিয়েছেন, সেটি প্রায় উলম্বভাবে নিচে পড়ে যায় আর আবাসিক এলাকায় পড়ার আগে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে পাক খায়।
ট্রাক চালক মার্চিংস্ বারবোসা (৪৯) যখন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন তখন তিনি কাজ করছিলেন, সেটি তার বাড়ি থেকে ১৫০ মিটার দূরে পড়ে।
তিনি বলেন, “আমি ভাবছিলাম এটি আমার ঘরেও পড়তে পারে, ছেলে ভেতরে আছে।”
তার পরিবারের সবাই ঠিক আছে, এটি জানার আগ পর্যন্ত তিনি অসহায় বোধ করছিলেন।
দুর্ঘটনাস্থলের কাছে বসবাস করা নাতালি সিকারি সিএনএন ব্রাজিলকে জানান, উড়োজাহাজের আঘাতে ‘ভয়ঙ্কর’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
“আমি দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। এমন সময় খুব কাছে খুব জোরালো শব্দ শুনলাম,” বলেন তিনি। ড্রোনের মতো শব্দ হলেও ‘অনেক বেশি জোরালো’ ছিল।
“বারান্দা গিয়ে দেখলাম, উড়োজাহাজটি পাক খাচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারলাম একটি উড়োজাহাজের জন্য এটি স্বাভাবিক অবস্থা না।”
সিকারির কোনো আঘাত না লাগলেও তিনি বাড়ি ছেড়ে সরে গিয়েছিলেন, উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর তার ঘরগুলো কালো ধোঁয়ার ভরে যায়।
“আমি ঘটনাস্থলে ফিরে এসে দেখি মাটিতে অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে, অনেক ছিল,” স্থানীয় ব্যান্ড নিউজকে বলেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হিকার্দো হোদ্রিগিস।
কী কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি, এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভোইপাস ব্রাজিলের অন্যতম পুরনো এয়ারলাইন্স। তদন্তে কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
Leave a Reply