কথায় আছে নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা। বাংলার বহুল প্রচলিত এই প্রবাদটিরই সৎ ব্যবহার করছিলেন ক্রিকেটাররা। ম্যাচ হারলে কখনো পিচের দোষ, কখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেটারদের নিয়ে বেশী চর্চা, আবার কখনো দলের ভেতরের অস্থিরতাকেই বড় করে দেখানো হয়েছে। অনেক তো একধাপ ওপরে গিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তের দিকে আঙুল তুলতেও দ্বিধা করেনি। তবে প্রশ্ন হলো, হাতুরু-পাপন-নান্নু কেউ তো নেই বিসিবিতে? এবার তবে অভিযোগের তীর উঠবে কার দিকে?
বিসিবির নতুন যুগে ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ধবলধোলাই হয়েছে টাইগাররা। দুই টেস্টের সেই সিরিজ হারার পর আফগানদের বিপক্ষে পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতেও ধবলধোলাই লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচে ছিল একাধিক ভুল ডিসিশন। ইনজুরিতে পড়া মুশফিক শান্তর কোনো বিকল্প ছিল না স্কোয়াডে, ইনফর্ম তাসকিনেরও জায়গা হয়নি মূল একাদশে। এসবের দায় কি এড়িয়ে যেতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট?
মেহেদী হাসান মিরাজ আর ৩৯ বছর বয়সী মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরি ম্লান হয়েছে আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের দায়িত্বশীল সেঞ্চুরিতে। অথচ এই গুরবাজ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে শুরুতেই কাটা পড়েন ঢাকা এক্সপ্রেস খ্যাত তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে। তবে কি শেষ ওয়ানডেতে তাসকিন আহমেদের না থাকাতেই গুরবাজের এমন হুঙ্কার? সমর্থকদের এই প্রশ্নটাতো একেবারে ফেলে দেয়ার মতোও না।
তাসকিনের জায়গার দলে সুযোগ পাওয়া নাহিদ রানা বল করেছেন ১৫১ কিলোমিটার গতিতে। প্রশংসা পেয়েছেন কিংবদন্তিদের। উইকেটও তুলে নিয়েছেন দুইটা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গুরবাজের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পর কাঠগড়ায় তাসকিন ড্রপের এ সিদ্ধান্ত।
স্কোয়াডে যোগ্য বিকল্প না থাকায় খেলোয়াড়দের মাঝে দেখা গেছে ক্লান্তির ছাপ। সাব ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামা রিশাদ হোসাইন ইনিংসের ১২তম ওভারে হাতছাড়া করেন গুরবাজের উইকেট। এ ছাড়া ইনিংসের ২২তম ওভারে মিরাজের পঞ্চম বলে গুরবাজকে স্টাম্পিং করার সহজ সুযোগ মিস করেন জাকের আলি অনিক। তিনবার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটি একাই কেড়ে নিয়েছেন এই ওপেনার।
প্রশ্নবিদ্ধ পরিকল্পনা কিংবা ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা সবই ছিল এই ম্যাচে। কিন্তু দোষটা চাপাবেন কার ওপর? বোর্ডে তো নেই সব সময় বলির পাঠা হওয়া হাথুরু-নান্নু কিংবা পাপন। এমনকি ক্রিকেটারদের মধ্যেও দলে নেই সমালোচিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তাই সিরিজ হারের পেছনে কোনো অযুহাত না খুজলে যা দাড়ায়, সেটিই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সত্যিকারের সামর্থ্য।
Leave a Reply