শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদীতে তীব্র ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম, বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাহেবনগর, বারুইপাড়া ইউনিয়নের মির্জানগরের অনেক এলাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়ছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি, বসতবাড়িসহ অনেক স্থাপনা। পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এসব এলাকায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। এর আগে পদ্মা নদীতে তিনটি জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের টাওয়ার পোল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চরম হুমকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়ক। শুষ্ক মৌসুমেও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষদের। অনেকেই নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কায় বসতবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন।
এসব এলাকার মানুষ ফসলি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধ করার জন্য অনুমোদিত প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে অজানা কারণবশত সেটি বিলম্ব হচ্ছে বলেও জানান তারা। এদিকে গতকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় পায়ে হেঁটে মিরপুর উপজেলায় বহলবাড়িয়া, তালবাড়িয়া সাহেবনগর সহ আশে পাশের গ্রামের পদ্মাপাড়ের ভাঙন পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. তোফিকুর রহমান। এসময় তিনি বহলবাড়িয়া এবং তালবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের খোঁজ-খবর নেন। নদী ভাঙনের শিকার মানুষদের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও চলমান স্থায়ী বাঁধের কাজে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো নিরসন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. রাশিদুর রহমান, কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল ওয়াদুদ, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (জুডিসিয়াল মুন্সিখানা, গোপনীয় শাখা, স্থানীয় সরকার এবং প্রকল্প পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন শাখা) মো. মহসীন উদ্দীন, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিবি করিমুন্নেছা, মিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মো. মেশকাতুল ইসলাম, মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অপুসহ, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনসাধারণ। জেলা প্রশাসক মোঃ তোফিকুর রহমান বলেন, ঠীকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগসহ যে সকল উপকরণের জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে, সে সব উপকরণ সংগ্রহ করে দ্রুতই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ আরো বেগবান করা হবে।
Leave a Reply