নড়াইল থেকে নিখোঁজের তিনদিন পর বাগেরহাটের ফকিরহাটের পুকুর থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া মরদেহটি সুরাইয়া শারমিন (৩১) নামের এক নারীর। তিনি নড়াইল সদর পৌরসভার আলাদাতপুর গ্রামের মৃত করিম মোল্যার মেয়ে। তার ১০ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার পর শরীরে ইট বেঁধে মরদেহ পুকুরে ফেলেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে ফকিরহাট উপজেলার জয়পুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সলেমান শেখের পুকুর থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) নড়াইলের নিজ বাড়ি থেকে শারমিন নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার বিকেলে বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন শারমিন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে এ ঘটনায় ওইদিন তার মা সবেজান বেগম নড়াইল সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সলেমান শেখের পরিবারের লোকজন থালাবাসন ধোঁয়ার জন্য পুকুরে যান। এসময় পুকুরে মানুষের দুইটি পা ভাসতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট থানার পুলিশের একটি দল সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে এবং লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। মরদেহের শরীরে বেশ কয়েকটি ইট বাঁধা ছিল। বোরকা পরা, পায়ে মোজা ও কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। ওই নারীকে প্রথমে কেউ চিনতে পারেনি। লাশের মুখমন্ডল কিছুটা বিকৃত হয়ে যায়। পরে সঙ্গে থাকা ব্যাগে পাওয়া চিরকুট থেকে তার পরিচয় জানা যায়।
জানতে চাইলে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ফকিরহাট থানার পুলিশের মাধ্যমে নড়াইলের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ গৃহবধূ সুরাইয়া শারমিনের মরদেহ উদ্ধারের খবর জেনেছি। গত শুক্রবার নিখোঁজ শারমিনকে খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে তার মা সবেজান বেগম নড়াইল সদর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেছিলেন। প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে,ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর কবীর জানান, মঙ্গলবার সকালে ফকিরহাট উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ছলেমান শেখের মালিকানাধীন বাড়ির পেছনের পুকুর থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শারমিন নামের ওই গৃহবধূকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধে হত্যা করে শরীরে ইট বেঁধে মরদেহটি পুকুরে ফেলে দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ওই নারীর মরদেহের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগের ভেতর প্রেসক্রিপশন থেকে প্রথমে তার নাম জানতে পারি। আর নড়াইলের চিকিৎসকের নাম থাকায় আমরা নড়াইল সদর থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ জানায় গত শুক্রবার সুরাইয়া শারমিন নামে ওই নারী নিখোঁজ। এই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে শারমিনের পরিবার। নামের মিল থাকায় আমরা এই মরদেহটি শারমিনের বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। নড়াইল পুলিশকে এই তথ্য জানিয়েছি। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Leave a Reply