কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তৈয়ব আলী নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে নিজ বসতঘরের সামনের একটি আম গাছ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত তৈয়ব আলী দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুরবাড়ি রাঙ্গামাটিয়া গ্রামেই বসবাস করছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁদের ছেলে আবদুল করিম জনি পাশের নোয়াপাড়া গ্রামের এরশাদ মিয়ার মেয়ে মাদ্রাসাছাত্রী মাইমুনা সুলতানা লুবনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লুবনার পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং মেয়েকে দ্রুত ফিরিয়ে না দিলে হত্যাসহ গ্রাম ছাড়ার হুমকি দেয়। মঙ্গলবার সকালে তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং বাড়ির বাইরে বাগানে গিয়ে সময় কাটাতে শুরু করেন। ভয়ের কারণে তিনি রাতে ঘরেও থাকেননি।
পুলিশ সূত্রে জানান যায়, স্থানীয় একজন তাকে রাতে বাড়ি ফেরালেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আবার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বুধবার সকালে রহিমা বেগম ঘরে ফিরে গিয়ে তৈয়ব আলীকে খুঁজতে শুরু করেন এবং একপর্যায়ে আম গাছের ডালে গামছা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। রহিমা বেগমের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয় এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, লুবনার মা মনোয়ারা বেগম জানান, তার মেয়ে লুবনাকে নিয়ে তৈয়ব আলীর ছেলে পালিয়েছে। তারা থানায় অভিযোগ করেছেন এবং আত্মীয়স্বজন ও পুলিশের সঙ্গে তৈয়ব আলীর বাড়িতে গিয়েছেন। তবে তারা কাউকে কোনও হুমকি দেননি।
স্থানীয় রাশেদুল ইসলাম জানান, লুবনার পরিবারের লোকজন পুলিশ নিয়ে তৈয়ব আলীর পরিবারকে হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই তৈয়ব আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
গ্রামের মোহাম্মদ আলী নামের একজন বলেন, মেয়ের চাচাসহ পুলিশ এসে তৈয়ব আলীর হাত ধরে টানাটানি করে এবং গ্রামবাসীর প্রতিবাদের মুখে দুই দিনের সময় দিয়ে চলে যায়। হতাশাগ্রস্ত তৈয়ব আলী গত কয়েকদিন ধরে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছিলেন। তার এমন মৃত্যু গ্রামবাসী মেনে নিতে পারছে না। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা তদন্ত করা প্রয়োজন।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, তৈয়ব আলীর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
Leave a Reply