উইমেন ডেস্ক: চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন স্বামী। খবর শুনে তাকে ছাড়াতে সন্তানসহ থানায় হাজির হন বাসচালক খোকন মিয়ার দুই স্ত্রী। তারা স্বামীকে ছাড়াতে পুলিশের কাছে অনেক কাকুতি মিনতিও করেন। তবে স্বামীর কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জিত দুই স্ত্রীই।শনিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এমন ঘটনা ঘটে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা কমপ্লেক্সে।
এর আগে দুপুরে মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্সের এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে খোকন মিয়াকে আটক করে পুলিশ।জানা গেছে, বাসচালক খোকন মিয়ার প্রথম স্ত্রীর গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার দেওয়াইর বাজার এলাকায়। ২০১৪ সালে বিয়ে হয় তাদের। ঘরে ৮ বছরের মেয়ে এবং ২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি খোকন মিয়ার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া বেপারীপাড়া গ্রামে। প্রথম বিয়ের খবর গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন খোকন।এ ঘরেও ৮ মাসের এক মেয়ে রয়েছে।
খোকন মিয়ার প্রথম স্ত্রী জানান, স্বামীর আটকের খবর শুনে তিনি থানায় এসেছেন। খোকন মিয়া ঠিকমতো কাজকর্ম করেন না। এজন্য তাদের সংসারে সারা বছর অভাব-অনটন লেগেই থাকে। এখন স্বামী আটক হওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছেন। দুই সন্তান নিয়ে কিভাবে চলবেন তাই নিয়ে তার দুশ্চিন্তা।তিনি বলেন, স্বামীকে ছাড়াতে পুলিশের হাত পায়ে ধরে কাকুতি মিনতি করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
দ্বিতীয় স্ত্রী বলেন, স্বামী প্রথম বিয়ে গোপন করে তাকে বিয়ে করেন। পরে বিষয়টি জানার পরও তার সঙ্গেই সংসার করছেন। অভাবের কারণে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়ে আলাদা বাসায় ভাড়া থাকেন তিনি। মাঝে মধ্যে সেই বাসায় যেতেন স্বামী খোকন। মেয়েটারও দেখাশুনা করতেন। তাই আটকের খবর পেয়ে তিনিও থানায় এসেছেন যদি অনুরোধ করে ছাড়িয়ে নিতে পারেন। কিন্তু মামলা হয়ে যাওয়ায় পুলিশ বলেছে তাদের কিছু করার নাই। রোববার আদালতে পাঠাবেন।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম জানান, চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা অভিযোগে বাসচালক খোকন মিয়াকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। তাকে রোববার আদালতে তোলা হবে।
তিনি আরও জানান, আটকের খবর পেয়ে খোকনের দুই স্ত্রী থানায় আসেন। তারা স্বামীর কুকর্মের জন্য ক্ষমা চান। একইসঙ্গে স্বামীকে ছেড়ে দিতে নানা কাকুতি মিনতি করেন। কাজ না হওয়ায় তারা দুজনেই চলে যান।
উল্লেখ্য, শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া এলাকায় কালামপুর এন্টারপ্রাইজ নামে চলন্ত বাসে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টা করেন চালক খোকন মিয়া। পরে তাকে পুলিশ আটক করে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
Leave a Reply