উইমেন ডেস্ক :খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনের জন্য খোঁড়াখুঁড়িতে খুলনা বাগমারা এলাকার একটি বাড়ি হেলে পড়েছে। ভবন হেলে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বাড়ির বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ভবন ত্যাগ করেন।সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে বাঁশ দিয়ে ভবনটি কোনো রকমে ঠেকিয়ে রাখেন। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ড্রেন নির্মাণের জন্য মাটি ও ইট তোলায় বাড়িটি হেলে পড়ে বলে মালিকের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।গত ১৫ দিন ধরে ওই ভবনের সামনে ড্রেনের কাজ করছিল রোজা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার বিকেলে নির্মাণ শ্রমিকরা ভবনের নিচ থেকে মাটি ও ইট তুলে ফেলেন। শ্রমিকরা চলে যাওয়ার পর ভবনের মূল দেওয়ালে ফাটল দেখা দেয়। এ সংবাদ পেয়ে বাড়ির সকলে ভবন ত্যাগ করেন।
স্থানীয়রা ভবনটি ধসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বাঁশের ঠেকা দিয়ে রাখেন।বাগমারা চেয়ারম্যান বাড়ির এক প্রতিবেশী মহিলা কাউন্সিলর মাজেদা খাতুনকে খবর দিলে তিনি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের খবর দেন। এতে ছুটে আসেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
খুলনা বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক বাবুল চক্রবর্তী জানান, সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে তাদের খবর দেওয়া হয়। ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে বাড়ির ভেতর থেকে সকল সদস্যকে বের করে আনা হয়। কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানা হয়নি। ড্রেনের ইটের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এ বাড়িটি।
এ বিষয়ে বাড়ির মালিক মরহুম মহিউদ্দিনের জামাতা তৌফিকুর রহমান পিন্টু বলেন, বাড়িটি পাকিস্তানি আমলের। ২৫ বছর আগে তার শ্বশুর বাড়িটি ক্রয় করেন। তিনতলা ভবনের ওপরে টিন সেডের কয়েকটি ঘর রয়েছে। মলিকসহ ভবনে ১২টি পরিবার বাস করেন। গত ১৫ দিন ধরে শ্রমিকরা এখানে মাটি খোঁড়ার কাজ করছে। আজ বিকেলে শ্রমিকদের বাড়ির মূল বেজের নিচ থেকে ইট তুলতে নিষেধ করা হলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। তারা বেজের ইট ও মাটি তুলে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পরে গাথুনি ফেটে যায় এবং বাড়িটি হেলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, পরিবারের সদস্য ও ভাড়াটিয়ারা আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ত্যাগ করলেও মালামাল ও মূল্যবান কাগজপত্র তারা বের করতে পারেননি।
রোজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. গোলাম আযম বলেন, কুয়েট, ডিডিসি ও কেসিসির উদ্যোগে সারা শহরব্যাপী ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে। ড্রেনের জন্য কোথাও সাত ফিট আবার কোথাও আট ফিট করে খোঁড়া হচ্ছে। বাড়িটি ড্রেনের ইটের সলিংয়ের ওপরে নির্মাণ করা। ইট খুঁড়তে গিয়ে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে বাড়িটি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভবনের নিচ থেকে মাটি যেন সরে না যায় সেজন্য বালু ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে নগরীর টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডে একটি দ্বিতল ভবন ড্রেন খোঁড়ার কারণে ধসে যায়।
Leave a Reply