1. mmisuk010@gmail.com : Misuk joy : Misuk joy
  2. admin@wordpress.com : root :
  3. rijukushtia@gmail.com : riju :

কুষ্টিয়ায় মহাসড়কে ট্রাক থামিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

  • আপডেট টাইমঃ সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৯৭ মোট ভিউ
লাল ফ্লাগ নিয়ে রশিদ দিয়ে মহাসড়কে চাঁদার টাকা আদায় করার সময় তোলা ছবি।

সত্যখবর ডেস্ক: পুলিশ ক্যাম্পের মাত্র কয়েক গজের মধ্যেই মহাসড়কে থামানো হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপ, ট্রাক্টর। এরপরই চালক ও তাঁর সহকারীর কাছ থেকে চাঁদার টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ-২৩/৯৯ শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে।
কয়েকজন শ্রমিক হাতে লাল ফ্লাগ নিয়ে রশিদ দিয়ে মহাসড়কে চাঁদার টাকা আদায় করছে। এতে বাদ যাচ্ছে না এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী অবৈধ যান ট্রলিও।

গেলো ছয়মাস ধরে এই মহাসড়কে এভাবেই প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির দৃশ্য দেখা যায় কুষ্টিয়া-পাবনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কুষ্টিয়ার মিরপুর থানাধীন তালবাড়ীয়া পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মহাসড়কে।

দিনরাত পালাক্রমে ট্রাক-পিকআপ, ট্রাক্টরের চালকদের থামিয়ে সার্ভিস চার্জ আদায়ের নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। আর চাঁদার টাকা না দিলে মহাসড়কে হয়রানির শিকার হন এসব যানবাহনের চালকরা। পুলিশ-প্রশাসনের সামনে মহাসড়কে এমন চাঁদাবাজি হলেও দেখেও দেখছেন না তারা। এতে ক্ষোভ-প্রকাশ করেছেন এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী চালক ও তার সহকারীরা।

অভিযোগ উঠেছে, এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত হাইওয়ে পুলিশসহ কর্তা ব্যক্তিরা। সবাইকে ম্যানেজ করে তোলা হয় চাঁদার টাকা এমনটাই অভিযোগ করেছেন চালক ও তাঁর সহকারীরা।

চাঁদার টাকা আদায়কারী শ্রমিকদের সাথে কথা হলে নাম-প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ-২৩/৯৯ এর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আকবর ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকের নির্দেশেই এই চাঁদা তোলা হয়। কিন্তু এই টাকা কোথায় যায়, সেই হিসাব জানা নেই তাদের। প্রতিদিন পাঁচশত টাকা হাজিরায় এই টাকা আদায়ের কাজ করেন তাঁরা।

এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী ভুক্তভোগী ট্রাক চালক আমিরুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মাসুদ, সোহেল রানাসহ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ যেন মগের মুল্লুক। জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের শ্রমিক ইউনিয়ন কমিটির নামে মহাসড়কে ট্রাক-পিকআপ, ট্রাক্টর থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এই মহাসড়ক দিয়ে যতবার যাব ততবারই ট্রাকপ্রতি ৬০টাকা। অন্যান্য জেলায় মহাসড়কে এমন চাঁদাবাজি না থাকলেও এখানে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন এই মহাসড়কে এভাবেই প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাক-পিকাপ ও ট্রাক্টরের চালকদের রশিদ হাতে ধরিয়ে দিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। দিনরাত সমানতালে জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজনের চাঁদাবাজিতে আমরা অতিষ্ঠ হলেও ভয়ে মুখ খুলতে পারি না। প্রতিবাদ করলেই গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়, করা হয় মারধরও। অনেকটাই নিরুপায় হয়ে এমন অন্যায় সহ্য করে আসছি আমরা। মহাসড়কে এমন চাঁদাবাজি বন্ধ করার দাবী জানাচ্ছি এতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ট্রাক চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের এই স্থানে ট্রাক-পিকআপ, ট্রাক্টর থামিয়ে দিনেরাতে চাঁদাবাজি চলছে। অন্য জেলার শ্রমিক আমি। এখানকার সংগঠনে চাঁদা দিয়ে আমার কি লাভ? মহাসড়কে এমন চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে জেলা ট্রাক ট্রাক্টর, কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আকবর আলী বলেন, অফিস খরচ ও অসুস্থ শ্রমিকদের কল্যাণ ব্যয় মেটাতেই চাঁদা টাকা তোলা হচ্ছে। এই টাকা শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে দুই ভাগে ভাগ হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি নিয়েই এ টাকা আমরা আদায় করছি। সারাদেশে আমাদের সংগঠনের লোকজন এভাবেই টাকা আদায় করে।

কুষ্টিয়া জেলা ট্রাক ট্রাক্টর, কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এই মহাসড়কে শ্রমিকদের কল্যাণে চাঁদার টাকা তোলা হয়। এটা আমাদের সংগঠনের নেতাদের অনুমতি নিয়েই টাকা আদায় করা হচ্ছে। খবর প্রচার করে কোনো লাভ নাই।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তালবাড়ীয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ইলিয়াস হোসেন বলেন, ট্রাক চালকদের অভিযোগের কারণে আমরাও এটি বন্ধ করতে গিয়েছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে ফিরে আসছি। এ ব্যাপারে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে ভালো হয়।

কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটি আগেও ছিল না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই মহাসড়কে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন শ্রমিক ফেডারেশন থেকে তারা উপরের নির্দেশে অনুমোদন করে নিয়ে আসছে। এটা জেলা পুলিশের সবাই জানেন, আমাদের হাইওয়ে পুলিশের কর্তৃপক্ষ সবাই জানে। শুধুমাত্র ট্রাক ট্রাক-ট্রলি, কাভার্ডভ্যান এই তিনটা জিনিস থেকে টাকা নিতে পারবে রশিদ দিয়ে। রশিদ বাদে টাকা নেওয়ার সুযোগ নাই। এর বাইরে টাকা নিলে আমাদের জানাবেন আমরা ব্যবস্থা নিবো।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, চাঁদার টাকা নেওয়া হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও পড়ুনঃ
© All rights reserved © 2021 | Powered By Sattokhobor Media Ltd
Site Customized By NewsTech.Com