1. mmisuk010@gmail.com : Misuk joy : Misuk joy
  2. rijukushtia@gmail.com : riju :
শিরোনামঃ
কুষ্টিয়ায় মাদকাসক্ত প্রধান শিক্ষক রাসেলের বিরুদ্ধে চলছে বিভাগীয় তদন্ত কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্বামীর অনুপস্থিতিতে ভাবিকে ধর্ষণ, দেবর নাইম কারাগারে ঝিনাইদহের আলোচিত তিন খুনের মামলায় শীর্ষ চরমপন্থী লিপটন রিমান্ডে শৈলকুপায় চাঞ্চল্যকর তিন হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার সাংবাদিক হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবিতে মানবাধিকার সমিতির মানববন্ধন মিরপুরে গৃহবধু সুমাইয়াকে হত্যা করে  আত্মহত্যার নাটক সাজানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন  জুলাই নিয়ে ফেসবু‌কে আপ‌ত্তিকর‌ পোস্ট করা সেই পুলিশ সদস্য বরখাস্ত হত্যার স‌ন্দেহ হওয়ায় গোরস্থা‌নে যাওয়ার প‌থে গৃহবধূর লাশ আট‌কে দিল পু‌লিশ অস্থির বাজার, দেশের বড় চালের মোকামে অভিযান ভিজিএফের কার্ড নিয়ে বিরোধে যুবক খুন, বিএনপি কর্মী গ্রেফতার
repliquemontre.co
www.igetaustralianvapor.com
www.topwatchesol.com

fake rolex

relojes replica

shi sha magic
franck muller replica

সরকারি কাজে সাশ্রয়ী ও যত্নশীল হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

  • আপডেট টাইমঃ সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১০৬ মোট ভিউ
সরকারি কাজে সাশ্রয়ী ও যতœশীল হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সরকারি কাজে সাশ্রয়ী ও যতœশীল হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সরকারি কাজে সাশ্রয়ী ও যতœশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্টদের বলেছেন, সরকার চলে জনগণের পয়সায়। সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল- বললে হবে না।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘মাদক থেকে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়। আমাদের সমাজ এর থেকে মুক্তি লাভ করুক। আমরা চাই যে জনপ্রতিনিধিরা জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ যতœবান হবেন।’
তিনি বলেন, আমাদের স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সকলকে আমি বলব ২০০৯ সাল থেকে আমরা সরকারে আছি। আজকে বাংলাদেশের একটি ধাপ উত্তরণ ঘটেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এটা যেন পিছিয়ে না যায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং জনসেবা করে যাবেন। আমরা যেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
সরকার প্রধান বলেন, আমি মনে করি আগামী দিনে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। একটা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করবে স্থানীয় সরকার। কাজেই স্থানীয় সরকার হবে সবচেয়ে শক্তিশালী।
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে আমরা ব্যবস্থা করে দেব কিন্তু স্থানীয় সরকার স্থানীয়ভাবেই দেশের উন্নয়ন করবে এবং জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব। জাতির পিতা যে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন সেখান থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কারো কাছে মাথা নিচু করে নয় মাথা উঁচু করে আমরা চলবো। আমরা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি, প্রতিটি স্কুলের উন্নয়ন, জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। বিভাগগুলোতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করছি, বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয় করে শিক্ষার মান আমরা উন্নয়ন করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৭১ সালের লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই স্বাধীনতার সুফল প্রতি মানুষের ঘরে পৌঁছাব এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেটা আমরা করতে পারব তখনই যদি সক্রিয় ভাবে আপনারা কাজ করেন এবং মানুষের সেবা করেন, তখনই এটা করা সম্ভব।
সরকার প্রধান বলেন, ‘৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আমাদের ফ্রিল্যান্সার আছে অনলাইনে কেনাবেচা হচ্ছে বাণিজ্য চলছে, রাস্তাঘাটের উন্নতি করে দিয়েছি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে সবদিক থেকেই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে। আর যে কাজগুলো করে দিই সেটা রক্ষণাবেক্ষণ এবং যতœ আপনাদেরই করতে হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেদুর রহমান খোকা শিকদার, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন আহমেদ লাবলু, পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র জাকিয়া খাতুন, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশিদ লাবলুও স্থানীয় সরকার সংস্থার বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার চলে জনগণের পয়সায়। এই অর্থ জনগণের-সেটা মাথায় রাখতে হবে। সরকার কাজটা করে দেয়, কিন্তু জিনিসটা তো জনগণের। একথা মাথায় রেখেই যতœ করতে হবে। কাজেই, আপনারা সেভাবে এগিয়ে যাবেন। ইনশাল্লাহ, আমরা জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) আমরা অর্জন করবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে এমন একটি দেশ আমরা গড়ে তুলবো যেখানে দক্ষ জনশক্তি থাকবে, দক্ষ সরকার হবে, দক্ষ্য অর্থনীতি এবং দক্ষ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাত মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে ‘ডেলটা প্ল্যান ২১০০’ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। কেননা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন সুন্দর জীবন পেতে পারে সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ব্যক্তি স্বার্থকে দূরে সরিয়ে রেখে, সার্বিকভাবে উন্নয়নের জন্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনাদেরকে চিন্তা করতে হবে। সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিষয়ে খোঁজ-খবর করার পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণের দিকেও আপনাদের দৃষ্টি দিতে হবে। ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ ও বাগান করা সব দিকে আপনাদের নজর দিতে হবে। তাছাড়া, আমাদের জলাভূমিগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং সেগুলো যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ এবং এই দেশে নদী নালা খাল বিলগুলো একটি দেহের শিরা উপশিরার মত। এই শিরা-উপশিরা সচল থাকবে পানির প্রবাহ ঠিক রাখার মধ্য দিয়ে।
জলাধার টিকিয়ে রাখার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, এক জায়গায় একটা পুকুর দেখলেই সেটা ভরাট করে সেখানে ভবন বানাতে হবে, মাথা থেকে তা ঝেড়ে ফেলতে হবে। কারণ, এই জলাধারগুলো আমাদের দরকার- বর্ষাকালে যে বৃষ্টির পানি আসে সেই পানি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে আমাদের ব্যবহার করতে হবে। যত বেশি বৃষ্টির পানি আমরা সংরক্ষণ করতে পারব ততো আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। আর জনস্বার্থে যথাযথ প্রয়োজনে প্রকল্প নিতে হবে। এক্ষেত্রে অহেতুক অর্থের অপচয় যেন না হয় সে ব্যাপারেও সবাইকে সচেতন থাকার তিনি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি গ্রাম নিয়ে বেশি চিন্তা করেন। শহরগুলোতে আমাদের যেমন স্যুয়ারেজ মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। তেমনি তিনি চান প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে পর্যন্ত এভাবে মাস্টার প্ল্যান করেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই স্বাস্থ্যকর ভাবে মানুষ বাঁচতে পারবে।
তিনি বলেন, পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের কৃষি কাজে ব্যবহৃত যত সেচ ব্যবস্থা সেগুলো সবগুলোতেই সোলার ব্যবস্থাপনা করে দেওয়া। সোলার প্যানেল ব্যবহার করে সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সেই পানি তুলে রেখে আমরা যদি ব্যবহার করতে পারি তাহলে বিদ্যুতের উপর চাপ কমবে। তিনি এ সময় সকলকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তাঁর সরকারের করে দেওয়া পানি শোধনাগারগুলো পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে জনগণের জন্য সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নজর দেওয়ার জন্যও তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাদেরকেই কিন্তু জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।
তিনি জনপ্রতিনিধিদের এজন্য দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী যারা আছেন তাদেরও কিন্তু দায়িত্ব রয়েছে কাজেই তারাও যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন- নির্দিষ্ট সময় পর পর এগুলো পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে কিনা।
তাঁর সরকার ৮ লাখ ৪১ হাজার ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করেছে, তাদের জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শেখ মুজিবের বাংলায় কোন মানুষ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না। কাজেই তিনি জনপ্রতিনিধিদেরকে অনুরোধ করেন তাদের এলাকায় খোঁজ নেওয়ার জন্য যে এমন কোন ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ রয়েছে কিনা। সরকার তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেবে। তিনি এসব প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণ করার পাশাপাশি পুনর্বাসিত জনগণের খোঁজখবর রাখার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতিও আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তাদের খোঁজ খবর রাখায় আপনাদেরও লাভ রয়েছে। কেননা নির্বাচনে তাদের ভোটটাও আপনাদের প্রয়োজন হয়। কাজেই তারা যদি আপনাদের কাছ থেকে সেবা পায় তাহলে আপনাদের উপরই আস্থা রাখবে।
সরকার প্রধান বলেন, জনগণের প্রতিনিধিদের জন্য সবথেকে বড় কথা হলো জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। সেটা যিনি করতে পারেন তার কোন অসুবিধা হয় না। আর সেটা যে করতে না পারে তাকে তো ব্যর্থ হতে হয়, ফেল করতে হয়, এটাই তো বাস্তবতা। সেটা মাথায় রেখেই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার জনগণের প্রতি তাদের জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনার এলাকার জন্য কোনটা করলে পরিবেশ সংরক্ষণ করা হবে, মানুষের যোগাযোগ হবে, মানুষ উপকৃত হবে, সেগুলো দেখে প্রকল্প নিতে হয়। যত্রতত্র যেখানে সেখানে একটা কিছু করে ফেলে দেওয়া উচিত নয়। কোনো জলাভূমি, খাল, নদী এগুলো রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের অর্থ সাশ্রয় করতে হবে। অর্থ সাশ্রয় করে কাজ করতে হবে। যাতে জাতীয়ভাবে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও পড়ুনঃ

জড়িত সাবেক অধ্যক্ষ ও সভাপতি কুষ্টিয়া সিটি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির হরিলুট ! স্যত খবর ডেস্ক : ১৮ জুন ২০২৫।। কুষ্টিয়া শহরের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ কুষ্টিয়া সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে কলেজ ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে কুষ্টিয়া সিটি কলেজের উত্তরা ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিন, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান মজনুসহ কলেজের কয়েকজন শিক্ষক এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে অনুসন্ধানে তথ্য মিলেছে। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর ১৯শে আগস্ট তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এর মেয়াদ শেষ হয়। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মজনু। ২০ আগস্ট থেকে কলেজটির এ্যাডহোক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক । সভাপতি হিসেবে মতিউর রহমান মজনুর মেয়াদকাল শেষ হলেও কুষ্টিয়া সিটি কলেজের নামে চালু থাকা উত্তরা ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার চলতি হিসাব থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। কলেজটির চলতি হিসাব টিকে টাকা উত্তোলনে সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান মজনুর স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে যার সত্যতা মিলেছে। ওই সময়কালে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আন্তাজ উদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিনের পূর্ণ সহযোগিতা নিয়ে সাবেক সভাপতি সহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও সিটি কলেজের সম্মুখে কুষ্টিয়া রাজবাড়ী মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা মার্কেট নির্মাণ ও দোকান বরাদ্দ নিয়েও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ উঠেছে। কলেজটির সম্মুখে গড়ে ওঠা এই মার্কেটের দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রেও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত দক্ষসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিজেদের নামে বরাদ্দ নেওয়ার পাশাপাশি, পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়দের নাম পরিচয় ব্যবহার করেছেন। কলেজের কাছে থাকা দোকান বরাদ্দের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায় সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মঞ্জু, তার স্ত্রী, কন্যা সহ পরিবারের সদস্যদের নামে বেশ কয়েকটি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিনও সুযোগের সৎ ব্যবহার করতে ছাড়েননি। আন্তাজ উদ্দিন তার নিজের নামে দোকান বরাদ্দ নেওয়ার পাশাপাশি, তার স্ত্রী ছেলে ও পুত্রবধূর নামে বেশ কয়েকটা দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। বরাদ্দ নেওয়া একটি দোকান শেখ আমানত আলী নামে এক ব্যক্তির কাছে ১৪ লক্ষ বিক্রি করেন। অথচ এই দোকান ক্রয় করতে কলেজ ফান্ডে তিনি মাত্র চার লক্ষ টাকা জমা দেন। আওয়ামী লীগের দোষর সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিন দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন খাত তৈরি করে কলেজের অর্থ লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অন্যান্য শিক্ষকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষক এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন, আন্তাসউদ্দিন মূলত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের কুষ্টিয়া ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ ও তার ভাই আতাউর রহমান আতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধরাকে সরা জ্ঞান করেন নি। ওই সময় প্রতিবাদ করারও সুযোগ ছিল না বলে শিক্ষকদের দাবি। এই প্রতিবেদকের হাতে আসা নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিগত সরকারের শাসনামলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে আওয়ামী লীগের এই দোসররা লক্ষ লক্ষ টাকা ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন। একটি নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কলেজের সম্মুখে যে মার্কেটটি নির্মাণ করা হয়েছে তার নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে আনুমানিক ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার মত। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, বরাদ্দকৃত দোকান থেকে উপার্জিত হয়েছে সমপরিমাণ অর্থ। অর্থাৎ দোকান বরাদ্দ থেকে আয় এবং ব্যয় কৌশলে একই দেখানো হয়েছে। মাঝখানে একাধিক দোকান বরাদ্দ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছেন তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। কলেজের শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদক কে জানান, আমরা যাদেরকে বাবা মায়ের পরেই সম্মানের জায়গায় রেখেছি সেই শিক্ষকরা কিভাবে এই ধরনের দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছে ভাবতেই অবাক লাগছে। এই শিক্ষার্থী দাবি করেন, একজন দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক কখনো তার শিক্ষার্থীদের ভালো শিক্ষা দিতে পারেনা। বিষয়গুলো নিয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা খুব বিরাজ করছে। যা যেকোনো সময় গণবিস্ফোরণ আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। অভিযোগের বিষয়ে কুষ্টিয়া সিটি কলেজের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মজনুর যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নাম্বারটি বন্ধ হওয়া যায়। কলেজটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আন্তাজ উদ্দিন এই প্রতিবেদন এর কাছে দাবি করেছেন, তিনি যা করেছেন নিয়ম মেনেই করেছেন। কলেজ ফান্ডের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনে সাবেক সভাপতি স্বাক্ষর কেন ব্যবহার করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার কোন সদ্য দিতে পারেননি। সদত্তর মিলেনি তার এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে বরাদ্দ হওয়া দোকানের বিষয়েও। কুষ্টিয়া সিটি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান এই প্রতিবেদককে জানান, অভিযোগের বিষয়গুলো নিয়ে ইতিমধ্যে তারা কাজ শুরু করেছেন। প্রত্যেকটি অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তপূর্বক অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। কুষ্টিয়া সিটি কলেজের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম সাজ্জাদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই অনিয়ম তছরুপ ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়গুলো অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে প্রত্যেকটি অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ দালিলিক প্রমাণাদি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি স্বীকার করেন, কুষ্টিয়া সিটি কলেজের অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জড়িত। ‌ অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিরাও যতই শক্তিশালী হোক না কেন প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এই প্রতিবেদকের কাছে আসা কুষ্টিয়া সিটি কলেজে সংগঠিত অর্ধশতাধিক অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তথ্য যাচাই-বাছাই সহ পর্যালোচনা করে প্রত্যেকটি ঘটনা প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা সহ স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ।

© All rights reserved © 2021 | Powered By Sattokhobor Media Ltd
Site Customized By NewsTech.Com