মিল্টন সমাদ্দার, বর্তমানে দেশব্যাপী আলোচিত ব্যক্তি। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রতারণাসহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ।
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো ‘ভয়ঙ্কর’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ।
গ্রেফতারের পর রাতেই ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবি কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ।
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে আশ্রয়কেন্দ্রটি অবস্থিত রাজধানীর মিরপুরে। মিল্টন সমাদ্দারের ভাষ্য, সেখানে আশ্রয়হীন বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সম্প্রতি সাভারে জমি কিনে আশ্রয়কেন্দ্রের স্থায়ী নিবাস বানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অসহায় বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে প্রচার চালান মিল্টন সমাদ্দার। কিন্তু সম্প্রতি কিছুদিন ধরে মিল্টনের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। মিল্টন ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে সেসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজন তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।
মিল্টন সমাদ্দার আশ্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে বেশির ভাগ লাশ রাতে দাফন করতেন বলে একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ বলেন, “তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- রাতে কেন লাশ দাফন করেন? তিনি জবাব দিয়েছেন, রাতে লাশ দাফন না করলে মানুষ আমাকে (মিল্টন) বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এটা তিনি (মিল্টন) উত্তর দিয়েছেন। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে।”
মিল্টন সমাদ্দার লাশ দাফনের যে হিসাব দিয়েছেন, তাতেও গরমিল আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ।
তিনি বলেন, “আমরা এটাও জেনেছি, ইতোমধ্যে তিনি ৯০০ লাশ দাফন করেছেন। কিন্তু ৮৩৫টি লাশের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। এসব লাশ দাফনের কোনও ডকুমেন্ট তার কাছে নেই। তিনি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন, নিজেই মৃত্যুসনদ তৈরি করে চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল জাল করতেন। তার আশ্রমের পাশে একটা মসজিদ আছে, সেখান থেকেও প্রশ্ন উঠেছে, লাশের শরীরে কিডনির পাশে রক্তের দাগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
Leave a Reply