#সুজনের স্ত্রীর হস্তশিল্প থেকে পোশাক কিনতে বাঁধ্য হচ্ছেন একাডেমির শিক্ষার্থীরা
সত্যখবর ডেস্ক: কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী যেন নিজের রামরাজত্বে পরিণত করেছেন জেলা কালচারাল অফিসার সুজন রহমান। শিল্পকলা একাডেমীতে চাকরি না করেও শুধুমাত্র স্বামী সুজন রহমানের কর্মস্থলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ রাজত্বে রানী বনে গেছেন তারই স্ত্রী রোখসানা পারভীন। কালচারাল অফিসার সুজন রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ একাধিক অভিযোগ নিয়ে টানা সংবাদ প্রকাশ করে চলেছেন দৈনিক সত্যখবরসহ একাধিক দৈনিক পত্রিকা।
প্রকাশিত সংখ্যাগুলোতে সুজন রহমান ও সুজন রহমানের ক্ষমতাবলে তার স্ত্রী রোখসানা পারভীনের বিতর্কমূলক কর্মকান্ড নিয়ে প্রতিদিন-ই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন সুজন রহমান ও তার স্ত্রীর দ্বারা লাঞ্চিত শিল্পীরা। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সুজন রহমান তার নিজ সংগঠনের শিল্পী এবং তার অনুসারী শিল্পীদের অধিক প্রাধান্য, জেলার বহুগুনী ও প্রতিভাবান শিল্পীদের সুযোগ তৈরী না করে দেওয়া, শিল্পকলার যেকোন অনুষ্ঠানে সুজন ও তার স্ত্রীর আধিপত্য, শিল্পকলাকে নিজের রামরাজত্ব হিসেবে ব্যবহার এবং যেকোন অনুষ্ঠানে আত্মীয়করণ করাসহ একাধিক অভিযোগের পর এবার খোঁজ মিলেছে নতুন তথ্যের।
একাধিক ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিল্পকলা একাডেমিকে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে সুজন রহমান ও তার স্ত্রী রোখসানা। সুজন কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকেও নিজেই সংগীতের প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছেন। সেখানেই গান শেখানোর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুঁলে বসেছেন তিনি। এতে কুষ্টিয়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষের মধ্যে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পকলার শিক্ষার্থীরা অধিক সুবিধা পাবার জন্য সুজনের তৈরী ‘হিন্দোল শিল্পী গোষ্ঠী’ তে ভর্তি হন। সুজন নিজ ক্ষমতা বলে এ সকল শিক্ষার্থীদের নানা মুখি সুযোগ-সুবিধা দিয়েও অন্যান্য শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এটি উঠে এসেছে। এছাড়া শিল্পকলাকে কেন্দ্র করে সুজনের স্ত্রী ‘প্রথমা হস্তশিল্প’ নামক একটি হস্তশিল্প খুলেছেন। আর সেখানেই শিল্পকলার শিক্ষার্থীদের পোশাক কিনতে বাঁধ্য করেন সুজন ও তার স্ত্রী। এই নিয়েও নানা অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে প্রতি বছর ১লা বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী ও মৃত্যুবার্ষিকীসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়াও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনেও বছরে একাধিক অনুষ্ঠানে শিল্পকলা অংশগ্রহণ করেন। এগুলো ব্যতিতও জেলা শিল্পকলার দিকনির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধায়নে প্রতি বছর কুষ্টিয়া জেলার উপজেলা গুলোতেও নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও জেলা শিল্পকলার আয়োজনে পিঠা উৎসবসহ বেশ কিছু এতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এসব অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণের জন্য শিল্পীদের নতুন নতুন পোশাক নির্ধারণ করেন শিল্পকলার কালচারাল অফিসার সুজন রহমান। সুজন রহমানের নির্দেশনা, পোশাকগুলো কিনতে বাঁধ্য করা হয় তার স্ত্রীর প্রথমা হস্তশিল্প থেকে। আর এ পোশাকগুলো অন্য দোকানের চেয়েও অধিক মূল্যে বিক্রি করেন সুজনের স্ত্রী রোখসানা। পোশাক কিনতেও সেখানেও মোটা অংকের ব্যবসা করছেন স্বামী-স্ত্রী। যা এতদিন মুখ বুঝে সহ্য করে আসছিলেন শিল্পকলার শিল্পীরা। বছরে একাধিকবার নতুন পোশাক কেনার সামর্থ্য না থাকায় অচিরেই ঝরে পড়তে হচ্ছে অনেক প্রতিভাবান শিল্পীদের। এ বিষয়গুলো নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ সাংস্কৃতিকমনা ব্যক্তিবর্গরা। তারা সুজন ও তার স্ত্রীর এমন স্বেচ্ছাচারিতার অবসান চান বলেও জানিয়েছেন।
এদিকে সুজন ও তার স্ত্রীর এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগী শিল্পীরা। যা ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গোপন রাখা হয়েছে। এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুজনের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply