1. mmisuk010@gmail.com : Misuk joy : Misuk joy
  2. admin@wordpress.com : root :
  3. rijukushtia@gmail.com : riju :

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দিনপ্রতি লাখ টাকা চাঁদাবাজি

  • আপডেট টাইমঃ শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২১
  • ৬৭ মোট ভিউ

উইমেন ডেস্ক: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে হরিলুটের গল্প এমনিতেও সংশ্লিষ্ট এলাকায় মৌ মৌ অবস্থায়। সরকারি নির্ধারিত টাকার বাইরে সরকারি-বেসরকারি সিন্ডিকেট এখানে প্রতিদিনই দলীল নিবন্ধন প্রতি বাড়তি টাকা আদায় করছে অন্তত ৮শ থেকে ১ হাজার।কার্যদিবস প্রতি এই বাড়তি চাঁদাবাজির মোট পরিমাণ দাড়ায় লাখ টাকার ওপরে। কোন এক অজানা ভয়ে দলীল রেজিস্ট্রি করতে আসা সাধারণ মানুষেরা সহজেই গুনে দিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ চাঁদার টাকা।

কার্যালয়ের প্রধান অফিস সহকারী জান্নাতুন ফেরদৌস মুন্নির ক্যাশবাক্সে জনগণের এই টাকা তুলে জমা দেন দলীল লেখকেরা। এদের মধ্যেও আছে শ্রেণী বিন্যাস। কেউ সিন্ডিকেটে ক্ষমতাধর আর কেউ দুর্বল। ক্ষমতায় দুর্বল দলীল লেখকেরা এখানে কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খায়। কেউকেউ বেছে নিয়েছেন দ্বিতীয় পেশাও। রেজিস্ট্রার কাজে আসা ব্যাক্তিদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় সরকারি আদায় রশিদ, যেখানে উল্লেখ থাকে দাপÍরিক ভাবে বৈধ গ্রহণের টাকার অংক মাত্র, যা ওঠানামা করে ৫শ থেকে ৮শ-এর মধ্যে। এর বাইরে প্রয়োজনকে জিম্মি করে আদায় করে নেয়া বাকি টাকার কোন হিসাব নেই। এমন হিসাব এই অফিসে খোঁজা হয়েছে আগেও, মিলেছে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য কিন্তু সমাধান হলেও তা হয়েছে ক্ষণস্থায়ী।

গণমাধ্যমে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলীল লেখকের ভাষ্যমতে, দলীল প্রতি মোট টাকা আগে ১৫শ তোলা হতো ১শ বাড়িয়ে এখন তা ১৬শ করা হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা তুলে তারা (দলীল লেখকেরা) মুন্নি ম্যাডাম কে দেন। পরে তা নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটে ভাগাভাগি হয়। দৌলতপুর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় ঘিরে গড়ে ওঠা ওই সিন্ডিকেটের সদস্য এবং স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, চাঁদাবাজির সবচেয়ে বড় অংশ কাটা হয় অফিস কর্তৃপক্ষের নামে, দলীল প্রতি ২শ টাকা মতো ভাগাভাগি হয় সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাথে সরাসরি জড়িত নয় এমন কয়েকজনের মধ্যে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীল নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সাংবাদিক ও পুলিশ-প্রশাসনের নামে তোলা টাকা কাউকে না দিয়ে গায়েব করে দিয়েছে দলীল লেখক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন। সাংবাদিক বা পুলিশ কেউই এই ভাগ নিতে চাননি। ভাগ বাটোয়ারার একটা অংশ নিজেরাও পান এই সমিতির পরিচালকেরা। তবে, এখানেও নেতৃত্বকে ঘিরে রয়েছে দুটি আলাদা গ্রুপ।মাহাতাব উদ্দিন গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সারাংশ দাড়ায়, কুষ্টিয়ার অন্যান্য উপজেলার চাইতে আমরা তুলনামূলক কম তুলি।

যা শুনেছেন, তা মিথ্যা। লেখকের হাতে জমা দেয়া টাকা ছাড়াও দলীলের কাজ সম্পন্ন করতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্মের কাছে বিভিন্ন ধাপে গচ্ছা দিতে হয় আরও কয়েকশো থেকে কয়েক হাজার টাকা। এ যেন জনগণের টাকা বাতাসে উড়ছে, যে যেমন পারে ধরে নিবে! গণমাধ্যমের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার বিভিন্ন সম্মানী রাজনৈতিক ব্যাক্তি, পুলিশ-প্রশাসন ও সাংবাদিকের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা তুলে আসছে এই সিন্ডকেট। যার পুরোটাই আসলে ভাগাভাগি হয় সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও কার্যালয় সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ পেশাজীবীদের মধ্যে।যা নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় আছেন নীতি-নৈতিকতার ভার নিয়ে পথচলা সংশ্লিষ্টরা।

মাসিক-সাপ্তাহিক-দৈনিক হিসাবে মোটা টাকা ভাগ হয় নিয়মিত।দৌলতপুরে কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে যাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়েছে তারা বলছেন, বিভিন্ন নামে বেনামে জুজুর ভয় দেখিয়ে এখানে অবৈধ টাকা আদায় চলছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা অতিতে বহুবার কাজ করেছি, সমাধান স্থায়ী হয়নি। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় এবং দলীল প্রস্তুতের কাজে জড়িতদের মধ্যে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট না ভাঙ্গতে পারলে বিষয়টি সুরাহা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ এমপি সোচ্চার হয়েও তার পক্ষে প্রতিদিন পাহারা বসানো সম্ভব হয়নি। এই সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে আসছে হরহামেশাই। সাব-রেজিস্ট্রার (প্রধান কর্মকর্তা) এখানে মোটেও টেকসই নয়। সবশেষ, গেল ১১ নভেম্বর নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিষ্ট্রার রাসেল মল্লিক হেনস্থার স্বীকার হয়েছেন। পরে পুলিশ প্রহরায় অফিস ত্যাগ করেছেন তিনি।

ওই সময় উপস্থিত হওয়া দৌলতপুর পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর তপন কুমার সিংহ বলেন, যাদের দলীলের কাজ অসমাপ্ত ছিলো, তারা তখনই সমাপ্ত করে দেয়ার দাবিতে কর্মকর্তাকে আটকে রেখেছিলেন, আমরা তাকে নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছি। চাঁদাবাজির প্রধান সমন্বয়কারী হিসাবে বেরিয়ে আসা জান্নাতুন ফেরদৌস মুন্নি বলেন, এখানকার পরিবেশ দিনদিন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, আমি নিজেও এখান থেকে বদলির চেষ্টা করছি।চাঁদাবাজি প্রসঙ্গ আস্বিকার না করে সাংবাদিকদের সাথে সরাসরি কথা বলার ইচ্ছাপোষণ করেন তিনি, নতুবা যোগাযোগ করতে বলেন সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের সাথে।

সহজে এবং কম সময়ে কাজ সম্পন্ন করিয়ে দেয়ার নামেও এখানে বাণিজ্যে সক্রিয় বেশকিছু অসাধু মানুষ।সাব-রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক বলেন, এখানে কর্মকর্তা থাকে না। বিভিন্ন সময়ের কাগজ জমা পড়ে আছে। উপজেলাটিও বড়। এখানে দালাল সিন্ডিকেট কাজ করতে পারে, তবে আমি ভিতরে বসে কাজ করি, বাইরে কি হয় বিষয়টি আমার পরিষ্কবার জানা সম্ভব না। দলীল প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়েও কিছু জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় অনেকের দাবি, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় সংশ্লিষ্ট বড়-ছোট বিভিন্ন স্তরের কর্মী-কর্মকর্তা এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত। স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের কোন অনুরোধও এই সিন্ডিকেটের কাছে চলে না বলে দাবি কারোকারো। তবে, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় কার্যালয় যেন মগের মুল্লুকে পরিণত না হয় সেই আকাঙ্খা স্থানীয়দের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও পড়ুনঃ
© All rights reserved © 2021 | Powered By Sattokhobor Media Ltd
Site Customized By NewsTech.Com