সত্যখবর ডেস্ক : কুষ্টিয়া পোড়াদহের প্রধান সড়ক সিএনজি স্ট্যান্ডের সামনে দাড়িয়ে ইজিবাইক থামিয়ে চালকদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা আদায় করছেন ঠান্টু ও আমজাদসহ এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের এই চাঁদা আদায়ের কার্যক্রম। যেসকল ইজিবাইক চালকরা টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে লাঞ্জিত করেন চাঁদাবাজরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পোড়াদহ বাজারের প্রবেশমুখেই রয়েছে সিএনজি স্ট্যান্ড। সেখানে সারি সারি রাখা হয়েছে সিএনজি। এসকল সিএনজি’র বেশির ভাগ চালক-ই ওই এলাকার স্থানীয়রা। এই স্ট্যান্ডের সামনেই কয়েকজন ব্যক্তিকে লাঠি হাতে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কেন তারা লাঠি হাতে দাড়িয়ে রয়েছেন জানতে চাইলে এক ইজিবাইক চালক জানান, এরা সিএনজি মালিক-চালক সিন্ডিকেটের ভাড়াটে লোক। টাকা দিলেই বাজারের ভেতর প্রবেশ করতে দেন তারা। আর টাকা না দিলেই ইজিবাইক থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিএনজি মালিক-চালকদের সিন্ডিকেটের কারণেই যাত্রীদের এমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। কোন ইজিবাইক চালক যাতে বাজার এলাকা থেকে যাত্রী তুলতে না পারে সেজন্যই লাঠি হাতে দাড়িয়ে সিএনজির স্ট্যান্ডের সামনে থেকেই থামিয়ে দেওয়া হয়। নামিয়ে দেওয়া হয় পোড়াদহ বাজার, স্টেশন সহ অন্যান্য স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসা যাত্রীদের। এতে চরম ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে যাত্রীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী একজন জানান, শনিবার (২৩ মার্চ) সকালে রাজশাহী যাওয়ার জন্য পোড়াদহ স্টেশনের উদ্দেশ্যে আসি। পোড়াদহ স্টেশনে পৌঁছানোর আগ মূহুর্তে সিএনজি স্ট্যান্ডের সামনে আসা মাত্রই বেশ কয়েকজন লোক লাঠি হাতে এসে আমাদের ইজিবাইকের পিছনে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। কেন এমন করছেন জানতে চাইলে, আমজাদ ও ঠান্টু ইজিবাইক থামিয়ে চাবি কেড়ে নেয় এবং যাত্রীদের নেমে যেতে বলে। এসময় তারা ইজিবাইক চালক ও আমাদের (যাত্রীদের) সাথে চরম খারাপ ব্যবহার করে। দাড় করিয়ে রাখে দীর্ঘ সময়। পরে একজনের মাধ্যমে ইজিবাইকের চাবি ফেরত দিলে কোনমতে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠতে সক্ষম হয় আমরা।
এদিকে একাধিকজন বলেন, পোড়াদহ বাজার কমিটির (বনিক সমিতি) ইন্ধনেই এসকল সিএনজি মালিক-চালকরা এরকমের অরাজকীয়তা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করেন বাজার কমিটির (বনিক) সভাপতি নুরুদ্দিন মেম্বার। তিনি বলেন, পোড়াদহের প্রধান সড়কে দাড়িয়ে ইজিবাইক থেকে যাত্রী নামিয়ে দেওয়া বা টাকা দিলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া এটা চরম অন্যায়।
এদিকে সাধারণ মানুষ মনে করছেন, দিনের পর দিন চাঁদাবাজরা এ ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে আসলেও বাজার কমিটির নিরব ভূমিকা অবশ্যই রহস্যজনক।
এ বিষয়ে মিরপুর-ইবি থানার সার্কেল আব্দুল খালেক জানান, এ ধরনের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাঁদা আদায় বন্ধ ও যাত্রীদের ভোগান্তির সুরাহা চেয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
Leave a Reply